কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট

পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বানভাসিরা

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ফকিরের চর এলাকার বানভাসি আকলিমা খাতুন পানিবাহিত চর্মরোগে ভুগছেন। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনো দুর্ভোগ কমেনি কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ৩ লাখের বেশি বানভাসি মানুষের। দূষিত পানি পান ও বন্যার পানিতে চলাফেরা করার কারণে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বন্যাদুর্গত এলাকায় বানভাসিদের চিকিৎসা সেবা দিতে কুড়িগ্রামে ২৫টি ও লালমনিরহাটে ৬টি বিশেষ মেডিকেল টিম কাজ করছে।

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে দুর্গম চরাঞ্চলে এখন ৩ হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন।

বন্যাদুর্গত এলাকার বাসিন্দারা চর্মরোগ, পেটের পীড়া, জ্বর, আমাশয় ও ডায়রিয়ায় ভুগছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা বানভাসিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে ফকিরের চর এলাকার বানভাসি আকলিমা খাতুন (৪৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ চরে অনেক বসতভিটায় এখনও বন্যার পানি রয়েছে। বন্যার পানির ভেতরেই তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। এতে তার হাতে-পায়ে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে।

গ্রামের সবগুলো পরিবারেই কোনো না কোনো রোগ দেখা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার চর কোদালকাটিতে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

একই ইউনিয়নের মশালের চর এলাকার বানভাসি নুর ইসলাম (৬৩) আমাশয় রোগে ভুগছেন। তার পরিবারের ৬ সদস্যের মধ্যে ৩ জনই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে তিনি জানান।

একই চরের টুলটুলি খাতুন (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার নাতি নাহিদ ইসলাম (৮) হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। বাড়িতে তার চিকিৎসা চলছে।'

তিনি জানান, বসতভিটা থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও, ভিটার চারপাশে এখনো বন্যার পানি আছে। বন্যার পানি ডিঙিয়ে তাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে পোড়ার চর এলাকার বিলকিস বেগম (৩৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার পায়ে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারছি না।'

তবে তাদের চরে এখনো কোন স্বাস্থ্যকর্মী আসেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মী আখতারুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা নৌকায় করে দুর্গম চরাঞ্চলে বানভাসিদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিচ্ছি।'

বন্যার্তদের খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেটও দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ-মোর্শেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের মেডিকেল টিম বানভাসিদের চিকিৎসাসেবা দিতে সক্রিয় আছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা দুর্গম চরাঞ্চলে যাচ্ছেন এবং বানভাসিদের মধ্যে ওষুধ বিতরণ করছেন।'

'পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে এখনো কেউ বড় কোনো জটিলতায় পড়েননি। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

9h ago