সীতাকুণ্ডের আগুন, ধোঁয়া, উত্তাপ আড়াই কিলোমিটার জুড়ে, পরোক্ষ প্রভাব ১০ কিলোমিটারে

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরের ছবি। ছবি: সংগৃহীত

সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে গতরাতের বিস্ফোরণে তৈরি আগুনের শিখা, ধোঁয়া ও বাষ্প চারপাশে অন্তত আড়াই কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং এর পরোক্ষ প্রভাব টের পাওয়া গেছে চারপাশের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা আর্থ জুমের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ ড. নন্দন মুখার্জি ডেইলি স্টারকে বলেছেন বেশি তাপমাত্রার কারণে স্থানীয়ভাবে নতুন ধরনের আবহাওয়া পরিস্থিতি বা মাইক্রো ক্লাইমেটিক অ্যাটমোস্ফিয়ার তৈরি হয়েছে।

'ওই এলাকার তাপমাত্রা বেড়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরেও মানুষ রাসায়নিকের দুর্গন্ধ পেতে পারেন এবং তারা চোখ জ্বালার সমস্যায় ভুগতে পারেন.' বলছিলেন তিনি।

টেলিফোনে তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বসবাসকারী লোকজনও বিস্ফোরণের কম্পন টের পেয়েছেন।

নন্দন জানান, প্রতি ঘণ্টায় তিনি স্যাটেলাইটে তোলা ছবি পরীক্ষা করছেন এবং আগুন ও বিস্ফোরণ থেকে উৎপন্ন তাপের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন।

শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লেগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরণটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে দুর্ঘটনাস্থল থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরের লোকজনও এর ধাক্কা টের পান।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র নিশ্চিত করেছে, ডিপোতে বিপুল পরিমাণ হাইড্রোজেন পারক্সাইড ছিল। হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি শক্তিশালী অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসাবে পরিচিত।

হাইড্রোজেন পারক্সাইড দাহ্য পদার্থ নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে আগুনকে তীব্র করে তুলতে পারে।

ঘটনাটি কাভার করা ডেইলি স্টারের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে বিশাল ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে ফায়ার ফাইটারদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

আমাদের চট্টগ্রাম অফিসের খবর অনুযায়ী, ডিপো এলাকার আশেপাশে বসবাসকারী গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন তাদের চোখ জ্বালা করছে, কষ্ট পাচ্ছেন।

এ পর্যন্ত দমকলকর্মীরা কেন আগুন নেভাতে পারেনি, তা উল্লেখ করে নন্দন বলেন, পানি দিয়ে রাসায়নিকের আগুন নেভানো কঠিন।

বিস্ফোরণের আগে কন্টেইনার ডিপো এলাকা। ছবি: সংগৃহীত

সাধারণত রাসায়নিক থেকে আগুনের তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে তাই আগুন নেভানোর পরিবর্তে পানি জলীয় বাষ্প হয়ে যায়।

'তাই ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার না করে অন্যভাবে চেষ্টা করতে হবে,' বলেন তিনি।

তিনি আগুনের গতিবিধি বুঝতে এবং তা নেভানোর কৌশল নিতে উপগ্রহ চিত্রের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেন।

নন্দন মুখার্জি জানান, বিকেল ৫টায় ডিপো এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২ কিলোমিটার এবং কুমিরা, বারবকুণ্ড ও সীতাকুণ্ড শহরের দিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হচ্ছিল।

স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে নন্দন বলেন, আগুন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দিকে যাচ্ছিল যা প্রতিবেশগতভাবে বিপন্ন এলাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands. 

1h ago