আবারও উত্তপ্ত শ্রীলঙ্কা, কলম্বোয় কারফিউ জারি
শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোয় শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং জল কামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে শহরটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে দ্বীপরাষ্ট্রটি এই সংকটে পড়েছে। ফলে জ্বালানি, খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ আমদানিতে সংগ্রাম করছে। অনেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে দোষারোপ করেছেন। দেশটিতে চলমান বিক্ষোভ মাঝে মাঝেই সহিংস হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার প্রেসিডেন্টের বাড়ির সামনে একটি মিছিলের আয়োজন করেন ইন্টার ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ফেডারেশনের সদস্য ওয়াসান্থা মুদালিজ। তিনি বলেন, মানুষ জ্বালানির লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দিনে ৩ বার খাবার খেতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়ব না।
এক বিবৃতিতে রাজাপাকসে বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে এবং খুব শিগগির অত্যাবশ্যকীয় পণ্যসহ অন্যান্য সেবা সরবরাহ করা হবে। বিদ্যমান সমস্যাপূর্ণ পরিস্থিতির যখন সফল সমাধান পাওয়া গেছে, তখন জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপ্রীতিকর।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা সারারাত ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে, স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, ট্রেড ইউনিয়ন এবং বিরোধী দলের সমর্থকসহ অন্যান্য বিক্ষোভকারীরা শনিবার তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে কলম্বোসহ বেশ কয়েকটি শহরতলিতে কারফিউ জারি করা হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পুলিশ। তবে, কবে থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
পুলিশের একটি নোটিশে বলা হয়েছে, কারফিউয়ের আওতায় থাকা এলাকাতে বসবাসকারীদের ঘরে থাকতে হবে। কারফিউ ভঙ্গ করা হলে তাকে জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের মুখপাত্র নলিন থালদুওয়া জানিয়েছেন, কলম্বোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং প্রায় ৩ হাজার পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান প্রধান সরকারি ভবনের চারপাশে শক্তিশালী ব্যারিকেডও মোতায়েন করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি বলেছেন, শনিবারের বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠায় আশঙ্কা আছে।
শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি চুং সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
Comments