ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেমি, ধরলার ৪১ সেমি উপরে

দুর্ভোগে আড়াই লাখ বানভাসি মানুষ
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের চর যাত্রাপুর এলাকা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে সামান্য কমে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ বুধবার সকালে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। আজ সকাল ৬টায় তা কমে বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একই সময় ধরলার পানি কুড়িগ্রামের সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা গতকাল সকাল ৬টায় ছিল ৪২ সেন্টিমিটার।

আজ সকাল ৬টা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল রাত ৯টায় এ নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১২ ঘণ্টায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও কমতে পারে। নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ এখনো পানিবন্দি আছেন।'

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার প্রধান নদী তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে তিস্তার পানি উঠানামা করছে। উজান থেকে ঢল আসলে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখন বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো থেকে পানিতে নামতে শুরু করেছে।'

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের চর যাত্রাপুর এলাকার বানভাসি জরিনা বেওয়া (৬৩) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘরে বুক সমান পানি। গতকাল বিকেলে ঘর ছেড়ে সরকারি রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি।'

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব দৈখাওয়ার চর এলাকার বানভাসি নবির হোসেন (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার কারণে ৭ দিন হলো ঘর ছেড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছি।'

'এখনো সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা পাইনি,' যোগ করেন তিনি।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারি ত্রাণ মাত্র ২০ শতাংশ বানবাসির মধ্যে বিতরণের পর শেষ হয়ে যায়। বন্যায় এই ইউনিয়নে ২০ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।'

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ডিআরআরও) আব্দুল হাই সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বানভাসিদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করছি, আজ বা আগামীকালের মধ্যে বরাদ্দ পেয়ে যাবো। বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিতরণ করা হবে।'

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, জেলায় আড়াই লাখ মানুষ বানভাসি হয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

BNP hopes for quick polls after minimum reforms

Meeting sources said some political parties, mainly the Islamist ones, emphasised the need to hold the local body election before the national election

3h ago