২০৩ শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক

চিলমারী বিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের দুর্গম চরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ২ বছর ধরে পাঠদান চলছে এক শিক্ষক দিয়ে।

এমন ঘটনা ঘটেছে চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নে ডাটিয়ার চর এলাকায় দক্ষিণ নটারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

বিদ্যালয়টিতে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৩ জন। তবে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকে ৫৫-৬০ শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়টিতে ৬ শিক্ষক পদের মধ্যেই ৫ পদই শূন্য। বিদ্যালয়ে কর্মরত আছে শিক্ষক রোজিনা খাতুন। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৯০ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টি ১৯৯৮ সালে ভাঙনের কবলে পড়লে তা সরিয়ে ওই ইউনিয়নের ডাটিয়ার চর এলাকায় স্থানান্তর করা হয়।

২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের পর ৫ শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। গত ২ বছর আগে ৪ শিক্ষক অবসরে যান।

চিলমারী বিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোজিনা রোজিনা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২ বছর ধরে একাই বিদ্যালয়টিতে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। এটা আর সম্ভব হচ্ছে না।'

'বিদ্যালয়ে ৫ শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতও অনেক কমেছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমি এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার বলেছি। কোনো কাজ হয়নি।'

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিমু আক্তার ডেইলি স্টারকে বলে, 'এখানে পাঠদান হচ্ছে না। এখানে এসে সময় কাটিয়ে আবার বাড়িতে ফিরে যাই।'

'একজন ম্যাডাম আছেন। তিনি মাঝে মাঝে ২-১টি ক্লাস নেন। অনেক বন্ধু বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে,' যোগ করে সে।

শিক্ষার্থীর অভিভাবক সোহরাব হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়টিতে পড়াশুনা হচ্ছে না। একজন শিক্ষক আছেন। তিনি একা পাঠদান কার্যক্রম সামাল দিতে পারেন না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের চরে বিদ্যালয় থেকেও না থাকার মতোই। ছেলে-মেয়েরা পড়াশুনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।'

অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

বিদ্যালয়টিতে কোনো ম্যানেজিং কমিটি নেই। এক বছর আগে চিলমারী সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেনকে আহবায়ক করে কমিটি করা হয়েছিল। কিন্তু, তিনি কোনদিনই বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যাননি।

জাকির হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নানা কর্মব্যস্ততায় বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যেতে পারিনি। সেখানে ৫ শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে তা জানি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আপাতত সেখানে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করে পাঠদান চালানো হবে।'

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একজন শিক্ষককে দিয়ে একটি বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে তা জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।'

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

3h ago