শত কোটি টাকা ‘অপচয়' ও অনুমোদনহীন উইকেন্ড প্রোগ্রামের দায় কার?

জাবির বিদ্যমান নতুন প্রশাসনিক ভবন। ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে চলমান 'অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে' শত কোটি টাকার অপচয়সহ তথ্য গোপনের মতো গুরুতর সব অভিযোগ উঠলেও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে তার কোনো মন্তব্য নেই বা কিছু করার নেই এমন বক্তব্যকে হতাশাজনক বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনরা।

সম্প্রতি উন্নয়ন প্রকল্পে শত কোটি টাকা কেন 'অপচয়' হতে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে দ্য ডেইলি স্টারকে উপাচার্য জানান, 'আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না কারণ এগুলো যখন হয়েছে তখন আমি এসবের সাথে যুক্ত ছিলাম না। এখন আর আমার কিছু করার নাই।'

কিন্তু নথি অনুসারে, 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন' শীর্ষক প্রকল্পে নির্মিতব্য উল্লেখযোগ্য ভবনের আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, ড্রইং প্রণয়ন করার লক্ষ্যে বুয়েটকে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা ও তৎকালীন বুয়েটের সহযোগী অধ্যাপক আহসানুল্লাহ মজুমদারকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের সভাতে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলমের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) হিসেবে উপস্থিত থাকার প্রমাণ মিলেছে।

এই সভাতে উপাচার্যের উপস্থিত থাকার নথি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে।

অন্যদিকে, শত কোটি টাকা 'অপচয়' করার ব্যাপারে উপাচার্য কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না বলে মত দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনরা।

এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ আনু মোহাম্মদ বলেন, 'যেদিন থেকে তিনি উপাচার্য পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন সেদিন থেকেই সকল দায় তার ওপর বর্তায়। তিনি আগে থেকেও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট। তিনি চাইলেই এগুলোর দায় এড়াতে পারেন না। তাছাড়া, পদাধিকার বলে তার করার আছে অনেক কিছুই। দায় এড়ানোর প্রবণতা নিয়ে দায়িত্বে থাকা কেন?'

তিনি আরও বলেন, 'দায় না এড়িয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে টাকার অপচয় রোধ করা তার দায়িত্ব।'

এ ব্যাপারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের আহ্বায়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, 'আমরা যখন উপাচার্যের কাছে তৃতীয় প্রশাসনিক ভবনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করি তখন তিনি বলেন যে সব দাপ্তরিক কার্যক্রম একই ভবনে নিয়ে আসার জন্য এই ভবন। কিন্তু তিনি জানতেন যে বর্তমান প্রশাসনিক ভবনটি অসম্পূর্ণ। এটি তথ্য লুকানো বা তথ্য গোপন ছাড়া আর কিছুই না।'

'এই তথ্য গোপনের বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা আশাবাদী যে বর্তমান উপাচার্য শত কোটি টাকা অপচয় হতে দেবেন না।'

এছাড়া, সান্ধ্য কোর্সের নাম পাল্টে অনুমোদনহীন উইকেন্ড প্রোগ্রাম চালানোর ব্যাপারেও বর্তমান উপাচার্য এর দায় চাপিয়েছেন সাবেক উপাচার্যের ওপর।

এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদ আনু মোহাম্মদ বলেন, 'উইকেন্ড প্রোগ্রামের দায় তো বর্তমান উপাচার্য চাইলেই এড়াতে পারেন না কারণ তিনি চার বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও বটে। উইকেন্ড প্রোগ্রামগুলো নিয়মানুযায়ী তারই আওতাধীন।'

এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য গত ৩ দিন ধরে উপাচার্য ও তার সচিবদের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করতে চেয়ে ও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও সময় দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তারা।

অন্যদিকে, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
Major trade bodies miss election deadline

Major trade bodies miss election deadline as reforms take centre stage

Elections at major trade bodies have missed the 90-day deadline as new administrators of the business organisations seek amendments to the governing rules.

18h ago