ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় বামপন্থী সংগঠনের নিন্দা ও বিচার দাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার নবগঠিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছে বামপন্থী কয়েকটি ছাত্র সংগঠন।
আজ মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
এর আগে বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে সংগঠনটির অন্তত ১৫জন নেতাকর্মী আহত হয়।
ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দাবি, ভিসির সঙ্গে সাক্ষাতের ঘোষণার পরপরই তাদেরকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ।
এ ঘটনার বিচার দাবি করে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার একাংশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এই ঘটনা ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ছাত্রলীগের দখলদারি ও সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির আরও একটি দৃষ্টান্ত। অপরিসীম ক্ষমতার নিকৃষ্ট অপব্যবহার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দালালি ও চাটুকারিতা ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।'
এতে আরও বলা হয়, 'ছাত্র ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছে। রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করা সন্ত্রাসমুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নির্মাণের অন্যতম পূর্বশর্ত। এই অবস্থায় ছাত্র ইউনিয়ন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং পরিবেশ পরিষদের বৈঠক আহ্বানের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করার দাবি জানাচ্ছে।'
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, 'বর্তমানে ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে ছাত্রলীগ। হলে গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, জোর-জবরদস্তি করে শিক্ষার্থীদের মিছিলে আসতে বাধ্য করছে তারা। এমনকি বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, নির্যাতন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্যকর অবস্থান না নিয়ে বরং এই নির্যাতন হামলাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, এই নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের দাবিতে ছাত্র সমাজের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা দরকার। আমরা ছাত্র সমাজকে সেই বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।'
এদিকে ছাত্রদলের ওপর হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (বাংলাদেশ জাসদ) ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'ভিন্নমত দমনে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের পেশি শক্তির ব্যবহার অগণতান্ত্রিক ও শিক্ষা সন্ত্রাস হিসেবে বিবেচিত। বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের হামলার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক দায়িত্বশীলতার কারণেই কিছুদিন পর পর এহেন ঘটনার প্রেরণা যোগায় বলে আমাদের বিশ্বাস। আজকে ছাত্রদলের ওপর হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।'
Comments