কাকরাইল মোড়ে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জমায়েত শুরু, চলছে অনশনের প্রস্তুতি

কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

আবাসন সংকট নিরসনসহ চার দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে তৃতীয় দিনের মতো জমায়েরত হতে শুরু করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে জড়ো হতে থাকেন। এখানেই জুমার নামাজের পর থেকে গণঅনশনে বসার কথা শিক্ষার্থীদের।

ঘটনাস্থল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী জানান, রাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী এখানে ছিলেন। সকাল ৯টার পর থেকে আরও শিক্ষার্থীরা আসতে থাকেন।

সকাল ১০টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরাও কাকরাইল মোড়ে এসে জড়ো হন।

সকাল ১১টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী এখানে এসে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানান। সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে।

আন্দোলনরত ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী হেলাল উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা গত তিন ধরে যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। উল্টো আমাদের ওপর পুলিশি নির্যাতন চালানো হয়। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। জুমার পরে আমরা গণঅনশনে বসব।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো বেলাল উদ্দীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বার্ষিক ৩০৬ কোটি টাকা বাজেট চেয়েছি। এটা কি খুব বেশি বাজেট? বিশ্ববিদ্যালয়কে টাকা দিলে রাষ্ট্র জিতে যাবে, হারবে না। আমাদের রাস্তায় রাখবেন না, প্লিজ।'

তিনি আরও বলেন, 'একজন শিক্ষার্থীর জন্য আমরা মাত্র তিন হাজার টাকা বৃত্তি চেয়েছি। এর ফলাফল প্রত্যন্ত গ্রামে চলে যাবে। যে বাবা খেতে কাজ করে সন্তানের জন্য ৫ হাজার টাকা জোগাড় করে পাঠায়, তার জন্য সহযোগিতা হবে।'

জবি শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে দাবি ছিল তিনটি। এগুলো হলো, আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন। 

এসব দাবি নিয়ে গত বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার জন্য যাওয়ার সময় কাকরাইল মোড়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এবং জানান যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা না করে তারা ফিরে যাবেন না এবং  শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার নিশ্চিত করাও দাবির অন্তর্ভুক্ত করেন।

পরে সেদিন রাতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাদের সঙ্গে কথা বলতে এলে, তার দিকে বোতল ছুঁড়ে মারাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়। 

পরে, গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা বিকেলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় 'শাটডাউন' ঘোষণা দেন।  

রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় বৈঠক করলেও, কোনো সমাধান আসেনি।

পরে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন জানান, শুক্রবার জুমার পর তারা গণঅনশনে বসবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Public gatherings banned in key Dhaka areas from tomorrow: ISPR

Restrictions imposed to maintain order near Chief Adviser’s Office, military zones

31m ago