‘প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হতে পারে না’

অবস্থান কর্মসূচির পর কালো কাপড় পড়ে মৌন মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ছবি: স্টার

'প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত ছাড়া' গতকাল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটতে পারে না বলে মনে করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ চত্বরে চলমান পেনশন স্কিম বাতিলের আন্দোলনের অংশ হিসেবে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এমন মন্তব্য করেন তারা৷

এ সময় উপস্থিত শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহন করা, বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করা, আর কেউ যাতে আহত না হন তা নিশ্চিত করা এবং গতকালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেই দাবি জানান।

গতকালের ঘটনা উল্লেখ ছাত্করলরে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. শামছুল আলম বলেন, 'আমাদের সহকর্মীরা যে অবস্থায় ছিলো, যেকোনো অঘটন ঘটে যেতে পারতো। প্রশাসন বলতে কিছু ছিলো না।  আমি এ ধরণের প্রশাসন দেখিনি৷ গতকাল ছিলো নজীরবিহীন৷ আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মানস চৌধুরী বলেন, 'কালকে এই পরিস্থিতি ঘটার জন্য প্রশাসন দায়ী৷ যেসব পিকাপ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিলো, সেগুলো ঢোকার কথা ছিলো না।'

অবস্থান কর্মসূচির পরে তারা কালো কাপড় পড়ে এক মৌন মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন।

উল্লেখ্য, নতুন প্রশাসনিক ভবনে আজ জরুরি সিন্ডিকেট সভা চলছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর সোমবার মধ্যরাতে হামলা চালায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাবিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান করছিল। মধ্যরাতে জাবি শাখা ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা সেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। তখন আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে ঢুকে তাদের মারধর করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এক পর্যায়ে বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে ভিসির বাসভবন ভাঙচুর করে। সেসময় পুলিশ-ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও ছররা গুলি ছোড়ে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খন্দকার লুৎফুল এলাহী ও চার সাংবাদিক। আহত ও গুলিবিদ্ধরা এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এর আগে রাত ১২টার দিকেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠি হাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। সেই সময় বহিরাগতসহ ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী মিলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

15h ago