শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কুবি হলের হাউস টিউটরের পদত্যাগ

অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অংশগ্রহণে শিক্ষকদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।
শিক্ষকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো আবু তাহের। ছবি: স্টার

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সালমা আক্তার উর্মি। শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে তিনি পদত্যাগ করেন।

আজ সোমবার পদত্যাগপত্রে সালমা আক্তার উর্মি উল্লেখ করেন, আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের হাউস টিউটর পদে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছি। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনকে আমি অনিরাপদ বলে মনে করছি। এমতাবস্থায়, আমি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি। তবে আমি ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার অঙ্গীকার করছি।

এ ছাড়া, চিঠিতে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।

পদত্যাগের বিষয়ে সালমা আক্তার উর্মি বলেন, 'গতকাল আমাদের শিক্ষকদের ওপর সাবেক শিক্ষার্থী হামলা করেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না। তাই আবাসিক শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।'

শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় উপাচার্যসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।

গতকাল দায়ের করা অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অংশগ্রহণে শিক্ষকদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২৮ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষক সমিতির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের ওপর হামলা করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. আসাদুজ্জামান ও প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দীকির নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রবেশের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হানের পেটে ঘুষি ও পেছন দিক থেকে কনুই দিয়ে আঘাত করেন উপাচার্য। এরপর তার সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীরা মুর্শেদ রায়হানের পেটে ঘুষি মেরে প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে চলে যায়।

এতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোকাদ্দেস উল ইসলামের মুখে সজোরে ঘুষি মারেন। এরপর তারা সবাই মিলে মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে শারীরিক আঘাত করে।

এ সময় আরও অন্তত ২৩ শিক্ষকের ওপর হামলা এবং এরপরেও শিক্ষকদের ওপর শারীরিক আঘাত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

Comments