চবিতে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা
চট্টগ্রাম বিভাগের গবেষকদের বিভিন্ন গবেষণাকর্ম উপস্থাপন ও গবেষণার সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আয়োজিত হয়েছে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকে এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণার বৈচিত্র্যকে সবার সামনে উপস্থাপনের লক্ষ্যে জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এবং চিটাগাং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির (সিইউআরএইচএস) যৌথ উদ্যোগে 'চট্টগ্রাম রিসার্চ ফেস্টিভ্যাল' শীর্ষক এই মেলা আয়োজিত হয়।
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ৯টায় এ মেলা শুরু হয়।
চবি শিক্ষার্থী নুসরাত আফরিন ও সিলভিয়া নাজনীনের সঞ্চালনায় মেলার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী।
দিনব্যাপী এ মেলায় অংশ নেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১টি বিভাগ, ২৪ টি ল্যাবরেটরি এবং চট্টগ্রাম বিভাগের আরও ২০টি প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও এতে অংশ নেয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএসআইআর, এটমিক এনার্জি কমিশন, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফি রিসার্চ ইন্সটিটিউট, বন গবেষণা ইন্সটিটিউট, চিটাগাং রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর চিলড্রেন সার্জারি, গাসটো রিসার্চ গ্রুপ।
এ ছাড়া বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল শিশু-কিশোরদের রোবট ও অন্যান্য উদ্ভাবন নিয়ে রোবটিক্স টিম 'দি টেক একাডেমি'র ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শো ও উদ্ভাবনা পরিবেশনা।
আয়োজনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি সাদাফ সাজ সিদ্দিকী, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাসিম হাসান এবং গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর চৌধুরী। মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক, গবেষক ও বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার বলেন, 'বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা না হলে কোনো দেশই এগিয়ে যেতে পারে না। আমরা স্বপ্ন দেখি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘায়িত হবে, আমাদের রিসার্চাররা যে রিসার্চ করছে এসব ভালো জার্নালে প্রকাশিত হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে যাবে।'
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে বলেন, 'গবেষণা কার্যক্রম ছাড়া আমরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারব না। জ্ঞানভিত্তিক চর্চা ও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রম করতে হবে।'
মূল আলোচক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, 'গবেষণায় উন্নতির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন। গবেষণার জন্য প্রচার-প্রকাশনার চেয়ে দরকার বেশি বেশি গবেষণা কাজ।'
জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ও গবেষণা মেলার সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী বলেন, 'অধ্যাপক ইসলামকে স্মরণ করে তার যে ত্যাগ, সেই ত্যাগকে সম্মান দিতে চাই।'
মঞ্চে 'হাইলাইটেড রিসার্চ টক' অধিবেশনে নিজেদের উদ্ভাবন ও গবেষণা উপস্থাপন করেন বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রকৌশল, সমাজবিজ্ঞান, মানববিদ্যা, বাণিজ্য, পরিবেশ, সমুদ্রবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট ৮ জন গবেষক। এ ছাড়া ছিল 'স্পটলাইট রিসার্চ সেশন', যেখানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বিসিএসআইআর, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফি রিসার্চ ইন্সটিটিউট এবং দ্য টেক একাডেমির কার্যক্রম উপস্থাপন করা হয়।
বিকেলে সেরা স্টল পুরস্কার, সর্বোচ্চ স্কুপাস ইন্ডেক্সড প্রকাশনা পুরস্কার, সর্বোচ্চ ইমপেক্ট ফ্যাক্টর প্রকাশনা পুরস্কার, সেরা নারী গবেষক, সেরা উদীয়মান গবেষক, সেরা বিভাগ, বই প্রকাশনা পুরস্কার, সেরা গবেষণা শিক্ষার্থী পুরস্কার, মর্যাদাপূর্ণ গবেষণা প্রজেক্ট পুরস্কার, ইনোভেশন পুরস্কার বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।
Comments