ইবিতে ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, রাতভর বিক্ষোভ

ইবি বিক্ষোভ
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠায় এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক ছাত্রীকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে ইবি শাখার এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে রাতভর বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শ ছাত্রী। বিচার না পেলে তারা বড় আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।

জানা গেছে, ইবি ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের সুপারিশে খালেদা জিয়া হলের গেস্ট রুমে থাকছিলেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দা সায়মা রহমান।

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের পীড়াপীড়িতে হল প্রভোস্ট ড. ইয়াসমিন আরা সাথী ওই শিক্ষার্থীকে গেস্টরুম থেকে হলের নতুন ব্লকের ২০৪ নং কক্ষে উঠাতে সম্মত হন। তবে সেটি সায়মার বৈধ সিট নয়।

গত বুধবার ওই শিক্ষার্থী ২০৪ নং কক্ষে যান। সেখানে আরও ৩ শিক্ষার্থী বরাদ্দকৃত সিটে ছিলেন। কিন্তু, সায়মা সেই কক্ষে গিয়ে তার পছন্দমতো সিটে থাকার দাবি জানান। এতে কক্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে অন্য সিটে থাকতে বললে তিনি রাজি হননি।

সেসময় হলের বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পপি আক্তার ও অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বিষয়টি মেটাতে গেলে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠে সায়মার বিরুদ্ধে।

ঘটনার সূত্র ধরে সায়মা বিষয়টি তার বন্ধু ছাত্রলীগকর্মী শাহিন আলমকে জানান। তিনি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের সহযোগী।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহীন আলম ছাত্রলীগকর্মী হাফিজ ও মাসুমসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে খালেদা জিয়া হলে যান। তারা পপিকে রুম থেকে ডেকে এনে কটু কথা বলতে থাকেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এক পর্যায়ে শাহীন আলম তাকে মারতে চান বলেও অভিযোগ করেন পপি। আরও অভিযোগ উঠে—সেসময় পপির সঙ্গে থাকা তার বন্ধু আইসিটি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. পথিক প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করেন তারা।

মো. পথিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছাত্রলীগকর্মী হাফিজ পপিকে ডাকে। সেসময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পপিকে আঘাত করে। প্রতিবাদ করলে আমাকেও মারধর করে।'

সংশ্লিষ্টরা জানান, উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে দ্রুত সেখান থেকে চলে যান ছাত্রলীগ কর্মীরা।

বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষোভ শুরু করেন হলের সাধারণ ছাত্রীরা। প্রায় ২ শতাধিক ছাত্রী হলের মধ্যে আন্দোলন শুরু করেন। রাত ৮টার দিকে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাইলে ব্যর্থ হন।

পরে রাত ১১টার দিকে প্রভোস্টের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।

ছাত্রীদের সঙ্গে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশ্বাসে দিলে তারা আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।

এর আগে গতরাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত ছাত্রী সৈয়দা সায়মা রহমান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হল থেকে মেডিকেলে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত শাহিন আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লাঞ্ছনা ও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। কথার এক পর্যায়ে হাফিজকে হুমকি দেয় পথিক। এ নিয়ে শুধু ধাক্কার ঘটনা ঘটে।'

হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. ইয়াসমিন আরা সাথী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ সকাল ১১টায় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বসে এ বিষয়ে আলোচনা করবো। আশা করি, বিষয়টির সমাধান হবে।'

তিনি জানান প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া ক্যাম্পাসে আসবেন।

প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি মিটে যাবে।'

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

3h ago