অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কল রেকর্ড করবেন যেভাবে

অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কল রেকর্ড করবেন যেভাবে
ছবি: রয়টার্স

অনেক সময় আমাদের ফোনের কথোপকথন রেকর্ড করার দরকার পড়ে– সেটা হোক ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে বা কাজের প্রয়োজনে। অনেকে অফিস বা কাজের প্রয়োজনেও ফোনে সাক্ষাৎকার নেন, মিটিং সারেন। এসব সময়ে বিশেষ করে ফোনালাপ পুরোটা রেকর্ড করা থাকলে পরে কাজ করতে সুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কীভাবে খুব সহজে ফোনালাপ রেকর্ড করা যায়, তা নিয়েই এই লেখাটি। 

তবে কল রেকর্ডের আগে খেয়াল রাখতে হবে যেন অপরপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রয়োজনীয় কলটি রেকর্ড করা হয়। কল রেকর্ডের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

বিল্ট ইন ফোন রেকর্ডার 

বেশ কিছু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিল্ট ইন কল রেকর্ডিং ফিচার যুক্ত থাকে। স্যামসাং গ্যালাক্সি বা শাওমি রেডমি ১০-সি'র মতো কয়েকটি ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে এই সুবিধাটি আছে। এসব মডেলের ফোন সেটিংসে গিয়ে আগে থেকে রেকর্ডিং ব্যবস্থা চালু করা যায়। এ ছাড়া ম্যানুয়ালি কল শুরু হবার পরও রেকর্ড অপশন আসে, সেখান থেকেও কল রেকর্ড করা যায়। 

'অলওয়েজ রেকর্ড' ফিচারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক রেকর্ডিং চালু করার সুবিধা যেমন আছে, তেমনি প্রতিটি কনট্যাক্টের জন্য আলাদা রেকর্ডিংও চালু করা যায়। 

কল রেকর্ডিং অ্যাপ

অনেক অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আবার বিল্ট ইন কল রেকর্ডার থাকে না। সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী চাইলে তার প্রয়োজন অনুযায়ী গুগল প্লেস্টোর থেকে বিভিন্ন কল রেকর্ডিং অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন। যেহেতু এসব অ্যাপের মাধ্যমে অপরপক্ষকে কল রেকর্ড সম্পর্কে কোনো বার্তা দেওয়া হয় না, তাই এ ক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি গ্রহণ করাটা দরকার। বহুল প্রচলিত এসব কল রেকর্ডিং অ্যাপের মধ্যে রয়েছে অটোম্যাটিক কল রেকর্ডার, কল রেকর্ডার অ্যাপ– এসিআর, ব্ল্যাকবক্স কল রেকর্ডার ইত্যাদি। এগুলো ছাড়াও প্লে-স্টোর থেকে ভালো রেটিং আর রিভিউ দেখে অ্যাপ ডাউনলোড করা যায়।

বাড়তি ডিভাইসের ব্যবহার

অন্য বিকল্পগুলো পছন্দ না হলে অনেকটা সেকেলে পদ্ধতিতেও কল রেকর্ড করা যায়। এ ক্ষেত্রে সহজ উপায় হচ্ছে কল চলাকালীন স্পিকার চালু করে, দ্বিতীয় একটি ফোনের মাধ্যমে কল রেকর্ড করা। যেহেতু প্রতিটি স্মার্টফোনেই রেকর্ডিং অপশন থাকে, সে ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবার কথা না। তবে আশেপাশের অন্যান্য শব্দ যাতে চলে না আসে এবং অডিওর মান ভালো হয়– সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য আলাদা করে ওয়্যারলেস বয়া বা নয়েজ ক্যান্সেলিং মাইক্রোফোন ব্যবহার করা যায়। নয়তো পারিপার্শ্বিক আওয়াজের কারণে রেকর্ডকৃত কলের কথাবার্তা অস্পষ্ট মনে হবে। 

ফোনের পাশাপাশি কল রেকর্ডিংয়ে সাহায্য করতে পারে কম্পিউটারও। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সঙ্গে উইন্ডোস পিসি সংযুক্ত করে নেওয়া যায়। এতে করে ফোনের কল, মেসেজ– সবকিছুই কম্পিউটারে আদান-প্রদান সম্ভব। তাই দরকারি কোনো কল চলাকালীন কম্পিউটার ব্যবহার করলে, রেকর্ডিংয়ের জন্য বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। কেন না ফোনের চেয়ে কম্পিউটারে রেকর্ডিং ও অডিওর মান আরও ভালো হবে আর সেই সঙ্গে রেকর্ডিংয়ের সময়ও ফোন ব্যবহার করা যাবে। কম্পিউটারে কল রেকর্ডের জন্য ভালো অ্যাপ হবে অডাসিটি বা ফ্রি সাউন্ড রেকর্ডার। দুটোই বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। 

ফোন সংযুক্ত না করেও কল চলাকালীন স্পিকার চালু করে কম্পিউটারের ভয়েস রেকর্ডার দিয়ে কল রেকর্ড করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে ফোনের স্পিকার ও কম্পিউটারের স্পিকার দুটো যাতে যথাসম্ভব কাছাকাছি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

তবে এত ঝামেলা করার চেয়ে আলাদা একটি ভয়েস রেকর্ডার কিনে নিলেই দুটো মুঠোফোন বা কম্পিউটারের ঝক্কি পোহাতে হবে না। শুধু কল চলাকালীন ফোনের সঙ্গে রেকর্ডারটি সংযুক্ত করে নিতে হবে। স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মতো অ্যাপ হালনাগাদের সুবিধা হয়তো থাকবে না কিন্তু ভালো মানের রেকর্ডিংয়ের জন্য একটি নয়েজ ক্যান্সেলিং রেকর্ডার কিনে নিলে ফলাফল আশানুরূপ হবে। 

যেকোনো কারণেই কল রেকর্ড করার দরকার হতে পারে। তবে আমাদের সব সময় খেয়াল রাখা উচিত, এতে করে ব্যক্তিগত জীবনে বা পেশাদারিত্বে কখনো যেন অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত না হয়। অন্যের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও অপরপক্ষের ব্যক্তিগত সীমানাকে সম্মান করা সকলের দায়িত্ব। 

তথ্যসূত্র: এমইউও, পিসিম্যাগ, ক্যাশিফাই
 

Comments

The Daily Star  | English

65pc of suicide victims among students are teens: survey

Teenagers (aged 13-19) made up 65.7% of 310 students who died by suicide in 2024, according to a survey by Aachol Foundation.

1h ago