আসালাঙ্কার সেঞ্চুরিতে টাইমড আউটের ধাক্কা সামলে লঙ্কানদের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি
ইনিংসের মাঝপথে বেশ ভালো অবস্থানেই ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউটের অনন্য দৃশ্যের নাটকীয়তায় চরম ধাক্কা খেয়েছিল তারা। অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল পুরো দল। অমন পরিস্থিতি সামাল দিলেন চারিথ আসালাঙ্কা। দারুণ এক সেঞ্চুরিতে লঙ্কানদের এনে দিলেন চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।
সোমবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে ২৭৯ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। দলকে মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করে ১০৫ বলে ১০৮ রান করেন আসালাঙ্কা। দিল্লির উইকেটে এই রান তাড়া করা খুবই সম্ভব। তবে পুরো বিশ্বকাপে ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে কাজটা অতো সহজ হওয়ার কথা না।
ম্যাচ শুরু হয় মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ক্যাচ দিয়ে। প্রথম ওভারে শরিফুল ইসলামকে এক বাউন্ডারি মারলেও কুসল পেরেরা আউটসাইড এজড হয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে প্রথম স্লিপের সামনে থেকে ক্যাচ লুফে নেন মুশফিক।
এই ধাক্কার পর এগোচ্ছিলেন পাথুম নিসাঙ্কা। আড়ষ্ট থাকা কুসল মেন্ডিসকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন তিনি। দুজনের পঞ্চাশ পেরোনো জুটিতে থিতু হচ্ছিল শ্রীলঙ্কা।
সাকিব আসতেই গড়বড় করে বসেন কুসল। উঠিয়ে মারতে গিয়ে ধরা দেন লং অনে। ৩০ বলে ১৯ রান করে থামান তার সংগ্রাম। নিসাঙ্কা খেলছিলেন দারুণ। তানজিম হাসান সাকিবকে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারিতে এলোমেলো করে দেওয়ার পর নিজেই ডেকে আনেন বিপদ। তানজিমের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে হন বোল্ড। ৩৬ বলে তিনি ফেরেন ৪১ রান করে।
সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে এরপর আরেক জুটি পেয়ে যান আসালাঙ্কা। জুটিটি ক্রমশ হচ্ছিল বিপজ্জনক। দুজনেই ক্রিজে ছিলেন সচল। স্পিনারদের বলও সামচ্ছিলেন সাবলীলভাবে।
অতি আত্মবিশ্বাসী হতে গিয়েই ২৫তম ওভারে সামারাবিক্রমা ডেকে আনেন বিপদ। সাকিবকে ওড়াতে গিয়ে ধরা দেন মাহমুদউল্লাহর হাতে। তার ৪২ বলে ৪১ রানের আউটে ভাঙে ৬৩ রানের জুটি।
এরপরই সেই অনন্য দৃশ্য। ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে সময়মতোই ঢোকেন ম্যাথিউস। কিন্তু হেলমেটে গোলমাল থাকায় সেটা বদলাতে নিয়ে নেন বাড়তি সময়। স্ট্রাইক নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে পেরিয়ে যায় দুই মিনিটের বেশি সময়। সাকিবের টাইম আউটের আবেদনে এরপর তৈরি হয় নাটকীয়তা।
বেশ কিছু সময় মাঝমাঠে চলে বাক্য বিনিময়। সাকিব আবেদন প্রত্যাহার না করায় কোনো বল না খেলে চরম হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ম্যাথিউসকে। এক বলের মধ্যে দুই উইকেট পেয়ে দারুণভাবে খেলায় ফেরে বাংলাদেশ।
তবে আসালাঙ্কা ভাবছিলেন ভিন্ন। প্রচণ্ড মনোবলের পরীক্ষা দিতে থাকেন তিনি। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে ধনঞ্জয়ার আউটে ফের লঙ্কানরা ধাক্কা খায়।
বাকিটা টেনে নেনে আসালাঙ্কা। সপ্তম উইকেটে মাহিশ থিকশানাকে নিয়ে যোগ করেন ৪৮ বলে আরও ৪৫ রান। টেল এন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে সেঞ্চুরি করে আউট হন ৪৯তম ওভারে। তিন বল আগে অলআউট হওয়ায় তবু কিছুটা খেদ থাকতে পারে লঙ্কানদের। তিনশ ছাড়ানোর উইকেট হওয়ায় আক্ষেপও তাদের চড়া হওয়ারই কথা।
Comments