টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উরুগুয়ে
পুরো ৯০ মিনিট জুড়ে দর্শকদের জন্য উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিতে পারল না কোন দলই। একের পর এক ফাউলে বারবার থমকে গেল খেলা। মেরে খেলার স্রোতে রদ্রিগোকে মারাত্মক ফাউল করে ডিফেন্ডার নান্দেজ লাল কার্ড পাওয়ায় শেষের ১৫ মিনিট একজন কম নিয়ে খেলে উরুগুয়ে, তবু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি দরিভাল জুনিয়রের দল। পরে পেরে উঠেনি টাইব্রেকারের স্নায়ু চাপে।
লাস ভেগাসে মূল ম্যাচ গোল শূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে উরুগুয়ে। টাইব্রেকারে উরুগুয়ের হয়ে প্রথম শটে গোল করেন ফেদরিকো ভালবার্দে। তার রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ এডার মিলাতেও হতাশ করেন ব্রাজিলকে। উরুগুয়ের গোলরক্ষক রচেট ফিরিয়ে দেন শট। বেন্টেকার, আরাকাস্টাও গোল করেন উরুগুয়ের পেনাল্টি শ্যুট আউটে। ব্রাজিলের আন্দ্রেস পেরেইরা বল জালে জড়ালেও বারে মেরে দলকে ডুবান ডগলাস লুইস। এরপর অ্যালিসন বেকার গিমিনেজের শট ঠেকিয়ে ব্রাজিলকে কিছুটা আশা দিয়েছিলেন কিন্তু ম্যানুয়াল উগার্তে কোন ভুল করেননি শেষ শটে।
পুরো ম্যাচে ৬০ শতাংশ বল দখলে ছিলো ব্রাজিলের। গোলমুখে ৭ শটের ৩টা তারা রাখতে পারে লক্ষ্যে। ছন্নছাড়া ফুটবল খেলা উরুগুয়েও কেবল একটা শটই রাখতে পারে লক্ষ্যে। উল্টো হয়েছে ফাউলের মেলা। দুই দল মিলিয়ে ফাউল হয়েছে ৪১টি। এরমধ্যে ২৬টি ফাউলই করে উরুগুয়ে।
প্রথমার্ধে দুই দল ছিলো সমানে-সমান। বল দখলের লড়াইয়ে সামান্য এগিয়ে ছিলো ব্রাজিল। পরিষ্কার সুযোগও তাদের ছিলো বেশি। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে পেশির টানে মাঠ ছাড়েন উরুগুয়ের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাহু।
৩৫ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন দারউইন নুনেজ। লম্বা ক্রস বক্সে এসে পড়লে ফাঁকায় হেড করার জায়গা পেয়েছিলেন লিভারপুল তারকা, কিন্তু তিনি মারেন অনেক উপর দিয়ে। খানিক পরই গোলরক্ষককে একা পেয়ে সুযোগ হারান রাফিনহা।
ব্রাজিলের তরুণ সেনসেশন এন্দ্রিক প্রতিপক্ষের রক্ষণে বারকয়েক আতঙ্ক ছড়িয়ে একাধিক ফ্রি-কিক আদায় করেন। সেসব কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। এন্দ্রিক নিজেও প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলে বক্সের ভেতর বল পেয়ে তালগোল পাকান, কাটব্যাক করে সতীর্থকে দিতে গিয়ে হারান বলের নিয়ন্ত্রণ।
বিরতির পর চলতে থাকে একের পর এক ফাউল। প্রায় প্রতি মিনিটেই ফাউলের কারণে খেলা থমকে যাচ্ছিলো। কোন দলকেই ধারালো আক্রমণের পথে পাওয়া যাচ্ছিল না। ৭৪ মিনিটে ধাক্কা খায় উরুগুয়ে। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে তীব্র বেগে ছুটছিলেন রদ্রিগো। তাকে পেছন থেকে এসে বিপদজনক ট্যাকল করেন নান্দেজ। রেফারি শুরুতে হলুদ কার্ড দিলেও ভিএআর পরীক্ষায় যান। খতিয়ে দেখার পর এই ফাউলে আসে লাল কার্ড। শেষের কয়েক মিনিট ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। তবু তাও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। রক্ষণে শক্তি বাড়িয়ে শেষের কয়েক মিনিট পার করে দেয় উরুগুয়ে।
ধারালো সুযোগ না পেলেও অল্প বিস্তর যা এসেছিল তাও কাজে লাগেনি। ৮৪ মিনিটে ফাঁকা থাকা এন্দ্রিকের শট সহজেই ঠেকান উরুগুয়ের গোলরক্ষক। টাইব্রেকারে ব্রাজিলের মিলাতাও আর লুইস গড়বড় করলে আরও কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালের আগে বাদ পড়ার হতাশায় ডুবতে হয় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
আগামী ১১ জুলাই সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে লড়বে উরুগুয়ে।
Comments