ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষেও ভয়ডরহীন খেলার হুঙ্কার যুক্তরাষ্ট্র অধিনায়কের
রেকর্ডগড়া জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসর শুরু করল সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। কানাডাকে উড়িয়ে দেওয়ার আগে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে খেলা সিরিজে বাংলাদেশকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিল তারা। ধারাবাহিক এই সফলতার ভেলায় চড়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছেন দলটির অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। একই গ্রুপে থাকা দুই পরাক্রমশালী প্রতিপক্ষ ভারত ও পাকিস্তানকে হুমকি দিয়ে রাখলেন তিনি।
রোববার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে কানাডার বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৪ বল বাকি থাকতেই ১৯৫ রানের বড় লক্ষ্য তারা পেরিয়ে গেছে অ্যারন জোন্সের তাণ্ডবে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি স্বাগতিকদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরই ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রানের পেছনে ছুটে জয়ের নজির আছে স্রেফ মাত্র দুটি। বিশ্বকাপে কোনো আইসিসি সহযোগী সদস্য দেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের কীর্তিও গড়েছে আমেরিকানরা।
'এ' গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে আরও আছে ভারত, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড। এদের মধ্যে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান শিরোপাপ্রত্যাশীদের তালিকায় সব সময়ই থাকে। কানাডার বিপক্ষে ম্যাচের পর হুঙ্কার দিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে মোনাঙ্ক বলেছেন, 'আমরা যেভাবে খেলে চলেছি, সেভাবে খেলে যেতে চাই। পাকিস্তান কিংবা ভারত, যার বিপক্ষেই খেলি না কেন, আমাদের ভয়ডরহীন ক্রিকেট পাল্টাতে চাই না।'
কঠিন লক্ষ্য তাড়ায় নেমে এক পর্যায়ে ৮ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪৮ রান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্কোরবোর্ডে। অর্থাৎ বাকি ৭২ বলে তাদের লাগত ১৪৭ রান। সেখান থেকেই শুরু হয় জোন্সের ঝড়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন আন্দ্রিয়েস গাউস। স্রেফ ৪০ বলে ১০ ছক্কা ও ৪ চারে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন জোন্স। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড আছে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১ বার বল সীমানার বাইরে পাঠিয়েছিলেন তিনি। আর গাউস খেলেন ৪৬ বলে ৬৫ রানের ইনিংস।
অনুমিতভাবেই জোন্স ও গাউসকে কৃতিত্ব দিয়েছেন মোনাঙ্ক, 'আমার মনে হয়, এটা একটা দলীয় প্রচেষ্টা ছিল। গাউস ও জোন্স চাপ সামলে কানাডার মুঠো থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছে... আমরা সব সময়ই জানতাম, জোন্সের মধ্যে এভাবে খেলার সামর্থ্য আছে। সে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছে, নিজের শটে আস্থা রেখেছে। সে একেবারে নিখাদভাবে বল মেরেছে।'
দলকে জয়ের সুবাস দিয়ে তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৫৮ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়ে তোলেন গাউস ও জোন্স। টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো উইকেটেই এটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ রানের জুটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি আছে কেবল একটি। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস ও ওয়েন মরগ্যান যোগ করেছিলেন ১৫২ রান।
ঘরের মাঠে পাওয়া সমর্থনে আনন্দিত উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মোনাঙ্ক, 'গ্যালারিতে দর্শকের সংখ্যা দেখে সত্যিই খুশি। তারা ভীষণ উদ্যমী ছিল। আশা করি, তারা আমাদেরকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখবে।'
Comments