পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমার
রদ্রিগোর পা থেকে বল সৌভাগ্যক্রমে গিয়ে পড়ল নেইমারের পায়ে। এবার আর কোনো ভুল করলেন না তিনি। ডি-বক্সের ভেতরে ডান পায়ের জোরালো শটে জাল খুঁজে নিলেন তিনি। এরপর মাতোয়ারা হলেন বিরাট অর্জনের উল্লাসে। পেলেকে ছাড়িয়ে তিনি হয়ে গেলেন ব্রাজিলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
শনিবার সকালে বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব শুরু করেছে সেলেসাওরা। এস্তাদিও অলিম্পিকো দো পারাতে খেলার ৬১তম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন নেইমার। রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জার্সিতে এটি তার ৭৮তম গোল। এতদিন কিংবদন্তি পেলের সঙ্গে ৭৭ গোল নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন তিনি। এখন তিনি এককভাবে ব্রাজিলের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক।
ম্যাচের শুরুর দিকেই অবশ্য নেইমারের সামনে সুযোগ এসেছিল তিনটি বিশ্বকাপজয়ী পেলেকে টপকে যাওয়ার। কিন্তু ১৭তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। বলিভিয়ার ডি-বক্সে রদ্রিগোর শট আদ্রিয়ান হুসিনোর হাতে লাগায় রেফারি বাজিয়েছিলেন পেনাল্টির বাঁশি। এরপর স্পট-কিক থেকে হতাশ করেন আল হিলালের ফরোয়ার্ড নেইমার। তার দুর্বল শট অনায়াসে লুফে নেন গোলরক্ষক গিয়ের্মো ভিসকারা।
প্রথমার্ধের শেষদিকে আরও একবার নেইমারের সামনে বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ভিসকারা। অসাধারণ নৈপুণ্যে বলিভিয়ার পাঁচ ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন নেইমার। অপেক্ষা ছিল কেবল গোলরক্ষককে পরাস্ত করার। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল রুখে দক্ষতার ছাপ রাখেন ভিসকারা।
দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে রাফিনহার গোলেও অ্যাসিস্ট করেন ৩১ বছর বয়সী নেইমার। তবে নিজের কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটির দেখা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ৬১তম মিনিটে নিশানা ভেদ করতে সমর্থ হন তিনি। এই দফায় আর তাকে আটকাতে পারেননি ভিসকারা। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে আরও একবার গোলের উৎসব করেন নেইমার। রাফিনহার পাস থেকে কাঁপান জাল। ফলে জাতীয় দলের জার্সিতে ১২৫ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা বেড়ে হলো ৭৯টি।
২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ব্রাজিলের হয়ে অভিষেক হয়েছিল নেইমারের। সেদিনই আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথম গোলের স্বাদ পেয়েছিলেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে প্রীতি ম্যাচে ৭০ ম্যাচে ৪৬ গোল, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ২৫ ম্যাচে ১৬ গোল, বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচে ৮ গোল, কোপা আমেরিকায় ১২ ম্যাচে ৫ গোল ও কনফেডারেশন্স কাপে ৫ ম্যাচ ৪ গোল করেছেন তিনি।
নেইমারের জোড়া গোলে বলিভিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। তারা জিতেছে ৫-১ গোলে। তাদের হয়ে দুবার লক্ষ্যভেদ করেন রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড রদ্রিগোও। অন্য গোলটি আসে বার্সেলোনার উইঙ্গার রাফিনহার পা থেকে। এই জয়ে শুভ সূচনা করেছেন গত জুলাইতে সেলেসাওদের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের দায়িত্ব পাওয়া ফার্নান্দো দিনিজ।
Comments