বোলারদের নৈপুণ্যে মেট্রোকে অল্পতে বেঁধে ফাইনালে রংপুর
আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বল লেগ সাইডে খেলে অনায়াসে সিঙ্গেল নিলেন তানবির হায়দার। রান পূর্ণ করেই তিনি মাতলেন উল্লাসে। ডাগআউটে থাকা তার সতীর্থরাও তখন উৎসব করে মাঠের ভেতরে ঢুকতে লাগলেন। এমন দৃশ্যের অবতারণা হবে নাই বা কেন! ঢাকা মেট্রোকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির ফাইনাল নিশ্চিত করল রংপুর বিভাগ।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আসরের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে রংপুর। মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে শীতের সন্ধ্যায় লো-স্কোরিং লড়াইয়ে তাদের জয় ৪ উইকেটে।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা ঢাকা মেট্রোকে রংপুর ৯ উইকেটে ১০৭ রানের বেশি করতে দেয়নি। ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ কঠিন উইকেটে এরপর লক্ষ্য তাড়ায় কাজটা সহজ হয়নি তাদের জন্যও। ৬ উইকেট হারিয়ে ৪ বল বাকি থাকতে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে জায়গা পাকা করেন আকবর আলিরা। তানবির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ২৬ বলে অপরাজিত ২২ রানের ইনিংসে দুটি চার মারেন তিনি।
রংপুরের জয়ের মূল সুরটা বেঁধে দেন বোলাররা। ম্যাচসেরা হওয়া পেসার রবিউল ইসলাম ১৯ রানে ৩ উইকেট নেন। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি (১৬টি) আলাউদ্দিন বাবু ২৫ রানে পান ২ উইকেট। অফ স্পিনার আনামুল হক আনাম ১ উইকেট শিকারে দেন মাত্র ১১ রান। বাঁহাতি স্পিনার আরিফ আহমেদের ঝুলিতেও ১ উইকেট যায় ১৭ রানের বিনিময়ে।
আসরের প্রথম পর্বে সাত ম্যাচের সবকটি জেতা একমাত্র দল ছিল মেট্রো। প্লে-অফ পর্বে এসে তারা পেল প্রথম হারের স্বাদ। তাদের জয়যাত্রা থামলেও ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ রয়েছে তাদের। আগামীকাল রোববার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খুলনা বিভাগের মুখোমুখি হবে মেট্রো।
নিচু ও মন্থর উইকেটে মেট্রোর রানের চাকা শুরু থেকেই ছিল শ্লথ। অধিনায়ক নাঈম শেখ ফেরেন পাওয়ার প্লেতে। তার মতো সাদমান ইসলামও দুই অঙ্ক ছুঁয়ে বিদায় নেন। রানআউটে কাটা পড়া শামসুর রহমান শুভ রানের খাতা খুলতে পারেননি। এরপর দলটিকে আরও চেপে ধরেন রবিউল। নিজের টানা তিন ওভারে একটি করে উইকেটের দেখা পান তিনি।
একপ্রান্ত আগলে থেকে ইমরানুজ্জামান করেন ৩০ রান। ১৫ ওভার টিকে থাকা ওপেনার অবশ্য খেলে ফেলেন ৪২ বল। ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারানো মেট্রোর পুঁজি একশ ছাড়ায় সপ্তম উইকেটে ৩৪ রানের জুটিতে। বিপ্লব ২৪ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। আবু হায়দার রনি ৮ বলে দুটি ছক্কায় করেন ১৬ রান।
জবাব দিতে নামা রংপুর পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট হারায়নি। তবে স্কোরবোর্ডে বেশি রানও তারা জমা করতে পারেনি প্রতিপক্ষের দুই স্পিনার রকিবুল হাসান ও আলিস আল ইসলামের আঁটসাঁট বোলিংয়ে। সপ্তম ওভারে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিদায়ে। তার মতো থিতু হয়ে বিদায় নেন আরেক ওপেনার আবদুল্লাহ আল মামুন ও নাঈম ইসলাম। এই দুজনের মাঝে আউট হন অধিনায়ক আকবর।
তানবির ও আরিফুল হক পঞ্চম উইকেটে ৩১ রানের জুটিতে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান। আরিফুল ২০ বলে ২২ করে ফেরার পর আলাউদ্দিন রানআউটের শিকার হন। পরের বলেই ম্যাচ শেষ করে দেন তানবির। মেট্রোর পক্ষে ২৫ রানে ২ উইকেট নেন পেসার শহিদুল ইসলাম।
Comments