উইকেট পড়তে ভুল করেছে বাংলাদেশ!

Bangladesh Cricket Team
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

প্রতিপক্ষের জন্য গর্ত খুঁড়ে তাতে নিজেরাই উল্টে পড়ে যাওয়ার মতন ব্যাপার আরকি। উপমহাদেশের বাইরের দল দক্ষিণ আফ্রিকা এই অঞ্চলে দশ বছর টেস্ট জেতে না, অনভিজ্ঞতায় ভরা দলটিকে স্পিন বান্ধব উইকেটে কুপোকাত করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। একাদশে তিন স্পিনারের সঙ্গে মাত্র এক পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছিলো তারা। তবে সেটা পরে হয়েছে বুমেরাং।

নিজেদের ডেরা মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তরা লড়াই করতে পারেননি, হেরেছেন ৭ উইকেট। এই হারে ব্যাটিং ব্যর্থতাকে বড় দায় দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে দলের নেতিবাচক কৌশল এবং উইকেট বুঝতে না পারায় বড় কারণ।

টেস্ট শুরুর আগের দিন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, মিরপুরের উইকেট যেমন হয় তেমন উইকেটই থাকবে। বাংলাদেশ অধিনায়ককে ম্যাচ শেষে পাওয়া যায়নি। দলের হয়ে কথা বলতে এসেছিলেন ৯৭ রান করা মিরাজ। তিনি অনেকটা স্বীকার করে নিয়েছেন উইকেট বুঝতে না পারার কথা, 'আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম মিরপুরের উইকেট টার্নিং হবে। আমরা সব সময় প্রভাব বিস্তার করে এসেছি। এর আগেও খেলেছি আমরা এক পেসার নিয়ে। এমন না যে এবারই প্রথম খেললাম। সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি।'

অর্থাৎ উইকেট বাংলাদেশের চাওয়া অনুযায়ী এতটা টার্নিং ছিলো না। বরং আবহাওয়ার কারণে পেসাররা সিম মুভমেন্ট পেয়েছেন। কাগিসো রাবাদা ম্যাচে নিয়েছেন ৯ উইকেট, ৪ উইকেট নিয়েছেন ভিয়ান মুল্ডার। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসে হানা দিয়ে ৩ উইকেট নিতে পেরেছিলেন হাসান মাহমুদও।

হাসানের স্পেলের সময় আরেকজন পেসারের ঘাটতি টের পাওয়া যায় প্রবলভাবে। প্রথম ইনিংসে ১০৮ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬ উইকেট ফেলে দেওয়ার পর কাইল ভেরেইনা দাঁড়িয়ে যান। মুল্ডারকে নিয়ে আনেন ১১৯ রান, পরে ডেন পিটকে নিয়েও বড় জুটি করেন তিনি। তার সেঞ্চুরিতে ২০২ রানের লিড হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ১১২ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর জাকের আলি অনিককে নিয়ে ১৩৮ রানের জুটিতে মিরাজ লড়াই করেছেন। দলের আশাও জাগিয়েছিলেন তিনি। তবে চতুর্থ দিনে আবার দেখা গেল পেসারদের দাপট।

রাবাদা আর মুল্ডার মিলে আধঘণ্টার ভেতর মুড়ে দেন বাংলাদেশের ইনিংস। ১০৬ রানের লক্ষ্য ৩ উইকেট হারিয়ে ২২ ওভারেই তুলে ম্যাচ জিতে নেয় সফরকারীরা। তাদের ৩ উইকেট পড়েছে অনেকটা মারতে গিয়ে। তাইজুল ইসলাম ম্যাচে ৮ উইকেট নিলেও বাংলাদেশের স্পিন খেলা খুব কঠিন হয়নি তাদের।

প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম দুই পেসার খেলানোর পরও বলছেন উইকেট এমন জানলে আরও এক পেসার নিতেন তারা, 'এমন জানলে আরেকটা পেসার হয়ত খেলাতাম। আমার মনে হয় তারাও খেলাতো।'

মিরাজ অবশ্য শুধু পেসার ঘাটতির দায় দিচ্ছেন না। তিনি ও নাঈম হাসান প্রত্যাশা অনুযায়ী বল করতে পারেননি বলেও মনে হয় তার,  'চার বোলার ছিলো, এক পেসার আর তিন স্পিনার। আমরা জানি মিরপুরে স্পিনাররা প্রভাব বিস্তার করে। কন্ডিশন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে, ওরাও ভালো করেছে। হাসানও ভালো করেছে। আমরা যদি আরও ভালো করতাম, বিশেষ করে আমি। তাহলে কিন্তু এই প্রশ্নগুলো আসত না। আমিও অনেক ভালো বল করিনি। যে জিনিস আমার কাছ থেকে দল প্রত্যাশা করে যে ৬-৭ উইকেট নেবে, ম্যাচ জেতাবে।'

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

1h ago