টি-টোয়েন্টি দলে মাহমুদউল্লাহর সংযুক্তি এখন অভিজ্ঞতা নাকি বোঝা?

Mahmudullah

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খুব ভালো না খেলেও শেষ ম্যাচে সেমিফাইনালে যাওয়ার অপ্রত্যাশিত সুযোগ এসে গিয়েছিলো বাংলাদেশের সামনে। কঠিন সমীকরণ মেলাতে অন্তত চেষ্টা করবেন ব্যাটাররা , এমন আশা ছিলো সমর্থকদের। সবাইকে অবাক করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই সুযোগ নেয়নি বাংলাদেশ। তার মূলে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।  দ্রুত রান আনার পরিস্থিতিতে নেমে টানা পাঁচ ডট খেলে অভিজ্ঞ ব্যাটার ফেরেন ৯ বলে ৬ রান করে।

গোটা বিশ্বকাপেই তিনি ছিলেন ব্যর্থ। অনেক নাটকের পর বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে ৭ ম্যাচে মাত্র ১৫.৮৩ গড়ে করেন মোটে ৯৫ রান। স্ট্রাইক রেটের দশা ছিল একদমই বেহাল (৯৪.০৫)। এই পারফরম্যান্সের পর তরুণ কেউ হলে ভিন্ন কথা। তবে ৩৮ পেরুনো মাহমুদউল্লাহর ইতি লিখে ফেলাটাই স্বাভাবিক। তবে নির্বাচকরা ভাবছেন ভিন্ন। বিস্ময়করভাবে এই নাজুক পারফরম্যান্সের পরও মাহমুদউল্লাহ দল থেকে বাদ পড়েননি। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাকে রাখার ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর ব্যাখ্যায় সেই পুরনো ক্লিশে শব্দ- অভিজ্ঞতা!

আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দুই বছর পর। সেখানে খেলার সম্ভাবনা না দেখে দেশের ইতিহাসে সেরা তারকা সাকিব আল হাসান অবসর নিয়ে ফেলেছেন। তার মনে হয়েছে এসব দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলে ক্যারিয়ার টেনে লম্বা করার কোন মানে নেই। সাকিব অনুভব করছেন নতুনদের সুযোগ দেওয়ার এখনই সময়। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচকরা এই চিন্তায় হাঁটছেন না! অন্তত মাহমুদউল্লাহর বেলায়।

আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দুটি বিপিএল, জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টি এরকম আসর দেখে স্কোয়াড বাছাইয়ের সুযোগ আছে। প্রধান নির্বাচকও সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন। তাহলে এসব দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে তরুণ কাউকে বাজিয়ে দেখা নয় কেন?

বাংলাদেশ দলে কারো পারফরম্যান্স প্রশ্নবিদ্ধ করলে নির্বাচকদের ঈশারা থাকে বিকল্পের ঘাটতির দিকে। প্রশ্ন হলো মাহমুদউল্লাহর বিকল্প খুঁজতে হবে কেন? ২০১৮ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন,  নিদহাস ট্রফির মতন আসরে তার ঝলকও আছে সত্য। তবে সেটা তো ছয় বছর আগের ঘটনা। এরপরের সময়টায় তার পারফরম্যান্স কেবল তলানির দিকে। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩৮টি টি-টোয়েন্টি খেলে ২৩.৭০ গড় আর ১১৭.৮১ স্ট্রাইকরেটের মানদণ্ড তৈরি করেছেন তিনি।

বিশ্বকাপ মঞ্চে ৩৭টি ম্যাচ খেলে ১৭.৬২ গড় আর স্রেফ ১০৬.৭৬ স্ট্রাইকরেটে ৪৫৮ রান তার। এমন পরিসংখ্যানের কারো থেকে থেকে ভালো কেউ একজনের খোঁজ কেন করা হবে না? এখনই চেষ্টা শুরু করলে দুই বছর পর অন্তত  একটা সমাধানে পৌঁছানো তো সম্ভব।

প্রশ্নবিদ্ধ পারফরম্যান্সের পরও মাহমুদউল্লাহ কেন দলে? এমন প্রশ্নে নির্বাচকদের জবাব থাকে তার জায়গায় কাকে নেওয়া যায় আপনারা দেখিয়ে দিন! কাজটা যদিও নির্বাচকদের।

গত অগাস্ট মাসে তরুণ একটি দল পাঠানো হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ায়। এইচপির নামে সেই দল বিগ ব্যাশের কিছু দলের বিপক্ষে একটি টুর্নামেন্ট খেলে। সেই টুর্নামেন্টে মাহফুজুর রহমান রাব্বি, শামীম পাটোয়ারিদের মতন তরুণদের কিছু আগ্রাসী ইনিংস দেখা গেছে। দুই বছর পরের বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ নাকি এদের সম্ভাবনা বেশি সেটা বিচার করার দায়ভার নির্বাচকদের। আর কাউকে না পাওয়া গেলে কেন পাওয়া যাচ্ছে না সেই দায়টাও তো তাদেরই।

Comments

The Daily Star  | English

Former CEC ATM Shamsul Huda passes away at 83

As CEC, Huda oversaw the ninth parliamentary elections in 2008

46m ago