টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

৪ রান না পাওয়ার হাহাকার, কী আছে আইসিসির আইনে?

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পায়ে বল লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। কিন্তু আম্পায়ার আউট দেওয়ায় অতিরিক্ত খাতে সে রান পায়নি বাংলাদেশ। চার রানেই হেরে যাওয়ায় বিতর্ক শুধু বাংলাদেশের গণ্ডিতে আটকে নেই। ক্রিকেটবিশ্বেই এই নিয়ম নিয়ে হচ্ছে আলোচনা। আম্পায়ার এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত দেরিতে জানালেই কী রান পেত বাংলাদেশ? আইসিসির আইন কী বলে, দেখে নেওয়া যাক।

আসলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময়েই বল ডেড হয়ে যায় না। এর আগেই হয়, সেটা কখন? এমসিসির আইনের ২০.১.১.৩ ধারায় লেখা আছে- আউটের সিদ্ধান্ত যে ঘটনার কারণে হয়, ওই ঘটনার তাৎক্ষণিক মুহূর্তেই বল ডেড হয়ে যায়। মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রে যেমন- যখনই বল তার পায়ে লেগেছে, তখনই বল ডেড হয়ে গেছে। কারণ ওই বল পায়ে লাগার মুহূর্তের কারণেই তাকে আম্পায়ার আউট দিয়েছেন। সেটা পাঁচ সেকেন্ড দেরিতে দেওয়া হোক কিংবা দশ সেকেন্ড, সিদ্ধান্তের সময়ের উপর নির্ভর করছে না কখন ডেড হবে।

মাহমুদউল্লাহর বেলায় তাই বল বাউন্ডারি পেরিয়ে যাওয়ার পরও যদি আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দিতেন, তবুও বাংলাদেশ রান পেত না। এক্ষেত্রে ডেড হওয়ার আইনেই পরিবর্তন আনতে হবে। যেটি ব্যাপারটাকে মোটেও সহজ করে না, উল্টো জটিল থেকে জটিলতর করে তোলে।

ধরুন, আম্পায়ার আউট জানাতে দেরি করলেন যাতে ব্যাটিং দলের রান হারাতে না হয়, তাহলে ফিল্ডিং দল কী করবে? লেগ বাইয়ের রান আটকাবে না আবেদন করবে? ব্যাটার স্বেচ্ছায় মাঠ না ছাড়লে আবেদন ছাড়া তো আউটের বিধান নেই। এমন একটা অবস্থা ভাবুন- ব্যাটারের পায়ে লেগে বল গিয়েছে মিডউইকেটের দিকে। আম্পায়ার দেরিতে আউট জানালেন, ততক্ষণে ব্যাটিং দল দৌড়ে ১ রান নিয়ে নিল, তাহলে একইসঙ্গে একটা বলে রান ও আউট দুটিই হবে? দেখা গেল রিভিইয়ে আউটের সিদ্ধান্ত বদলে গেল, তাহলে শুধু ওই লেগবাইয়ের ১ রানই যুক্ত হবে। কিন্তু যদি ডিআরএস না থাকে, তখন কী হবে? আইন তো সব ধরনের ক্রিকেটের জন্য, শুধু ডিআরএস আছে এমন ম্যাচের জন্য নয়।

এখন মাহমুদউল্লাহর ঘটনায় আবার ফেরা যাক। যেমন ঘটনা ঘটেছে, সবই সেরকম হলো ধরুন। শুধু আম্পায়ার দেখতে পেলেন ওভারস্টেপিংয়ে নো বল হয়ে গেছে। তখন কিন্তু আম্পায়ার আউট দিলেও লেগ বাইয়ে পাওয়া রান যোগ হতো। তার কারণ হচ্ছে- যে ঘটনার (পায়ে বল লাগা) কারণে আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, সেটির আগেই বোলার ওভারস্টেপিং করেছেন। আর নো বলের ক্ষেত্রে এলবিডব্লিউর ডিসমিসাল যেহেতু নেই, সেক্ষেত্রে ওই আউটের ঘটনার সময়েও বল ডেড হয় না। তাই পায়ে লাগার পরের রানগুলোও যোগ হয়, আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানালেও।

বীরেন্দর শেওয়াগ বলেছেন- আম্পায়ার আউট দিতে দেরি করলেই হয়। ততক্ষণে রানটা নেওয়া হয়ে যাবে। পরে রিভিউয়ে নট আউট এলে সেই রান পাবে ব্যাটিং দল। আম্পায়ার এই ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত দিতে অপেক্ষা করবেন- একই ভাবনার কথা জানিয়েছেন ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারও। ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটারের সঙ্গে ইএপিএনক্রিকইনফোর একই অনুষ্টানে থাকা বাংলাদেশের তামিম ইকবাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মরনে মরকেলও একমত পোষণ করেছেন। তবে আইসিসির আইন বলছে, তাদের ধারণা ভুল।

মাহমুদউল্লাহর ঘটনায় আম্পায়ার আউট যদি দিতেন না, তখনই কেবল ওই চার রান পেত বাংলাদেশ। এরকম ঘটনা ভবিষ্যতেও ম্যাচে বড়সড় প্রভাব ফেলবে নিঃসন্দেহেই। তাই ক্রিকেটবিশ্বের অনেকেই এই নিয়মের পরিবর্তন চান। কিন্ত কীভাবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। নিউজল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল যেমন আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্ত বলে নিয়ম শুধরানোর কথা বলেছেন। আইসিসির সঙ্গেও নাকি তিনি এ বিষয়ে কথা বলেছেন আগেই। কিন্তু সমাধানের পথ তারও জানা নেই। তবে সঞ্জয়, শেওয়াগদের বলা আউটের সিদ্ধান্ত দেরিতে জানানো সমাধান নয়।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

5h ago