আচমকা পাওয়া নয় এই জয়

Bangladesh Cricket Team
ছবি: এএফপি

সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে নিজেদের দিনে যেকেউ যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। এমন একটা কথা চালু আছে, এবং সেটা বাস্তবও। তবে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে হুট করেই 'অঘটন'ঘটিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। এখানে সাফল্য পেতে চাই নিবিড় প্রস্তুতি, বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনা আর নিখাদ প্রয়োগ। রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের টেস্ট জয়টাও তাই একেবারেই আচমকা আসেনি।

ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে হার, টেস্টে অধারাবিকতা এবং নানামুখী অস্থিরতায় বাংলাদেশ দলকে নিয়ে এবার আশাবাদী ছিলেন কম লোক। কিন্তু অনেকের অনুমান ভুল করে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দেয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল টেস্টে পেয়েছে ঐতিহাসিক জয়।

অনেক সময়েই নানান বিষয়ে বিসিবির সমালোচনা হয়, সেসব যৌক্তিকও। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে পাঁচদিন ভালো খেলার পেছনে গত পাঁচ মাসের আদর্শ পরিকল্পনার প্রশংসা করতে হয়।

বাংলাদেশ দল সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিল গত মার্চে। এরপরের কয়েক মাসে জাতীয় দলের ব্যস্ততা ছিলো টি-টোয়েন্টিতে। টি-টোয়েন্টিতে না থাকায় মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, মাহমুদুল হাসান জয়দের মতন ক্রিকেটাররা অনেকটা খেলার বাইরে ছিলেন। কিন্তু তাদের এই সময়টায় মরচে ধরতে দেয়নি বিসিবি।

এই সময়ে চলেছে বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্প। ফিটনেস ও স্কিল নিয়ে কাজ করতে পেরেছেন তারা। লাল বলের অনুশীলন চালিয়ে যেতে পেরেছেন নিজেদের মতন করে।  ফিটনেস ও স্কিল নিয়ে টানা কাজ করার ফল দেখা গেছে সাদমান, মুশফিক, মিরাজদের খেলায়। টি-টোয়েন্টিতে না থাকা এসব ক্রিকেটারদের 'এ' দলের হয়ে এক ম্যাচ খেলাতে আগেভাগে পাকিস্তানেও পাঠিয়ে দেয় বিসিবি।

পাকিস্তানে উইকেট কেমন হতে পারে, প্রতিপক্ষের শক্তির জায়গা কি এসব বিবেচনায় নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনাও ছিলো জুতসই।

টেস্টে বরাবরই নাজুক বাংলাদেশের পারফরম্যান্স। বিশেষ করে অভাব ধারাবাহিকতার।  শান্ত অধিনায়ক হওয়ার পর গত নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে টেস্ট হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। পরের সিরিজে আবার শ্রীলঙ্কার কাছে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ধরাশায়ী। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতার পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হবে ধারাবাহিকতা রাখা। কারণ ধাক্কা খেয়ে প্রতিপক্ষও ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে মরিয়া হয়ে।

সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন বলছেন, টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতির ছাপ স্পষ্ট। ধারাবাহিকতার ঘাটতি থাকলেও বড় সাফল্যও ধরা দিচ্ছে। এখন কেবল মহাসড়কে উঠে যাওয়া গাড়িকে আরেকটু গতি দেওয়ার পালা।

টেস্টে বাংলাদেশের ভালো করার পেছনে পেসারদের ভূমিকা বিশাল। গত অর্ধ-যুগে উঠে এসেছেন বেশ কয়েকজন পেসার। দেশি-বিদেশি কোচদের তত্ত্বাবধায়নে বাংলাদেশের পেস বিভাগ এখন শাণিত। সুমনের মতে ফ্লুক না টেস্ট দলের এই পারফরম্যান্স, বরং তা পরিকল্পনার ফসল,  'আমরা যে টেস্ট জেতা শুরু করেছি তা মূলত পেসাররা ভালো করায়। আমাদের স্পিনাররা ভালো করে সব সময়। এখন পেসাররা ভালো করায় আমরা ২০ উইকেট নেওয়ার মতন দল হয়ে গেছি। পেসাররাই পিন্ডিতে মোমেন্টাম এনে দিয়েছে।'

'এই জয় ফ্লুক না। আমরা কিন্তু টেস্ট জেতা শুরু করেছি। নিউজিল্যান্ডকে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হারিয়েছি। দেশের মাঠেও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছি। এবার পাকিস্তানকে হারালাম।'

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago