মুলতানের দুঃখ তবু ভুলতে পারবেন না হাবিবুল, অলকরা

২০০৩ সালে মুলতানে অবিস্মরণীয় জয়ের কাছে গিয়েও ১ উইকেটে হারতে হয়েছিলো। সেই টেস্ট খেলা হাবিবুল বাশার সুমন বলছেন এবার পাকিস্তানকে টেস্টে হারানোর আনন্দ বিপুল হলেও মুলতানের কষ্ট ভুলার নয়।
Habibul Bashar and Alok Kapali

পাকিস্তানকে রাওয়ালপিন্ডিতে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় পাওয়ার দিন বারবার ফিরে আসছিল ২১ বছর আগের স্মৃতি। ২০০৩ সালে মুলতানে অবিস্মরণীয় জয়ের কাছে গিয়েও ১ উইকেটে হারতে হয়েছিলো। সেই টেস্ট খেলা হাবিবুল বাশার সুমন বলছেন এবার পাকিস্তানকে টেস্টে হারানোর আনন্দ বিপুল হলেও মুলতানের কষ্ট ভুলার নয়। মুলতান হাহাকারের আরেক সাক্ষী অলক কাপালির মতে, তখন জিততে পারলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবকিছুই অন্যরকম হতে পারত।

রোববার রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। টেস্ট দলটির বিপক্ষে এটিই প্রথম জয়। অথচ তাদের বিপক্ষে তো বটেই নিজেদের প্রথম জয় আসতে পারত টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার তিন বছরের মধ্যেই।

মুলতানে একদম জেতার কাছে চলে গিয়েছিল খালেদ মাহমুদ সুজনের দল। ইনজামাম উল হকের অতিমানবীয় ইনিংস আর আম্পায়ারের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সেবার পুড়তে হয়েছিল ১ উইকেটের হারের যন্ত্রণায়।

এবার পাকিস্তান বধের পর দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে সেই স্মৃতি তুলে ধরলেন সাবেক দুই ক্রিকেটার। অলক জানান সেবার পাকিস্তানকে হারানো হতো নানান দিক থেকেই অনেক বড় ব্যাপার,  'দেশের বাইরে ওই সময় টেস্ট জেতা ছিলো বিশাল ব্যাপার। বিশেষ করে পাকিস্তানের যে দল ছিলো ওই সময়, শোয়েব আখতারের মতন পেসার ছিলো তাদের দলে, ইনজামাম উল হক, মোহাম্মদ ইউসুফের মতন ব্যাটার ছিল। অনেক বড় বড় নাম ছিলো। ওই দলের সঙ্গে আমরা লিড নিয়েছিলাম, ম্যাচ জেতার মতন জায়গায় চলে গিয়েছিলাম। কাছে গিয়েও পারিনি। ইনজামাম এক্সট্রা অর্ডিনারি খেলেছে, আম্পায়ারের কিছু সিদ্ধান্তও আমাদের পক্ষে আসেনি। সব মিলিয়ে কপাল খারাপ ছিলো। এটা অনেকদিন আমাদেরকে যন্ত্রণা দিয়েছে। আমরা অনেক দিন পরে গিয়ে প্রথম টেস্ট জিতেছিলাম। তখন জিতলে সব কিছু অন্যরকম হতে পারত। কারণ আমরা টেস্ট মর্যাদা পাই ২০০০ সালে, তিন বছরের মাথায় পাকিস্তানকে হারানো হতো বিশাল ঘটনা।'

হাবিবুলের মতে মুলতানের দুঃখ কোনদিন ভুলবার মতন নয়, সেই ক্ষত থেকেই যাবে, 'অনেকেই জিজ্ঞেস করেছেন মুলতানের দুঃখ কি ভুলতে পেরেছি এবার? আমি বলব না সেই দুঃখ ভুলবার নয়। ওইটা ছিলো স্পেশাল টেস্ট। তখন জিতলে সব কিছু অন্যরকম হতো। আমরা তখন মাত্র ৩ বছর হয় টেস্ট খেলছি। সংগ্রাম করছিলাম টেস্টে, ম্যাচ জিতি না। এমন অবস্থায় পাকিস্তানকে পাকিস্তানের মাঠে হারানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। সেই দুঃখ আজীবন থাকবে।'

আগের দুঃখ থাকলেও নতুন আনন্দে ভাসতে আপত্তি নেই দুজনের। নাজমুল হোসেন শান্তর দলের পারফরম্যান্সে গর্ব অনুভব করছেন তারা। অলকের মতে এটা নতুন দিনের শুরু, 'আমি মনে করি এই জয়টা একটা নতুন দিনের শুরু হতে পারে টেস্টে। কারণ দেশের বাইরে জেতা, বিশেষ করে পাকিস্তানকে পাকিস্তানের মাটিতে হারানো একটা বড় ব্যাপার। টেস্টে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলি না। সেটার শুরু হতে পারে এবার।'

হাবিবুল দলের বোলিং নিয়ে বিশেষ করে গর্বিত, 'এই জয়ে গর্বিত অনুভব করছি। আমাদের দল পাকিস্তানকে ডমিনেট করে হারিয়েছে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে যে হতে পারে সেটা দেখা গেল। রোমাঞ্চকর একটা টেস্ট জিতলাম, খুব আনন্দ পেয়েছি। কাল যখন এক উইকেট পড়ল পাকিস্তানের তখনো ড্রই বেশি সম্ভাবনায় ছিলো। আজকে যে বোলিংটা করেছে বাংলাদেশ এটা নিয়ে গর্বিত হতে হবে। পিচে বিশাল কিছু হয়নি। শাহিনের আউটের সময় একটা বল নিচু হয়েছে। এছাড়া কিছু হয়নি। সাকিব একটা ফেইজে অসাধারণ বল করেছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

5h ago