দিল্লির এক চা-ওয়ালার বদান্যতা এবং সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তৃত্ববাদ

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত

নয়াদিল্লির এক অভিজাত এলাকার নাম চাণক্যপুরী। প্রাচীনকালের এক ভারতীয় দর্শনিক, অর্থনীতিবিদ, লেখক ও রাজ্যসভার প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন মহামুনি চাণক্য। তার নামেই এই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে 'চাণক্যপুরী'।

বর্তমানে এই এলাকায় রাজাদের অস্তিত্ব না থাকলেও আছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। চাণক্যপুরী এখন একটি কূটনৈতিক এলাকা। প্রায় ১৪০টিরও বেশি দেশের দূতাবাস রয়েছে এখানে।

কয়েকদিন আগেও চাণক্যপুরীর আকবার ভবনে সার্ক (সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন) দেশগুলোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছিল। নাম সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি (সাউ)। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় নামেও পরিচিত।

২০১০ সাল থেকে এটি আকবার ভবনে থাকলেও এ বছরের শুরুতে স্থানান্তর করা হয়েছে দিল্লির ময়দানঘুড়ি এলাকায় স্থাপিত ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে স্থাপিত স্থায়ী ক্যাম্পাসে।

সার্ক দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বাংলাদেশের ভূমিকা বেশ অগ্রগণ্য ছিল। চুক্তি অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহনে ৮টি দেশকেই টাকা দিতে হয়। ভারত একাই দেয় ৫০ শতাংশের বেশি এবং অবশিষ্ট খরচ দেয় সার্কের বাকি ৭ সদস্য দেশ।

ফিরে যাই আকবর ভবনের সেই পুরনো ক্যাম্পাসে, যেখানে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার হাজারো শিক্ষার্থী তাদের মাস্টার্স, এমফিল এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন।

এই আকবর ভবন থেকে মাত্র থেকে ১০০ মিটার দূরে মাটিতে বসে চা বিক্রি করতেন এক মাঝবয়সী ভারতীয়। ফুটপাতে চা বিক্রি করা এই মানুষটি আমাদের কাছে 'গুপ্তাজি' নামে পরিচিত ছিলেন।

গুপ্তজি চা বিক্রি করতেন সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত। তার ক্রেতা ছিলেন রাতে দিল্লি শহর ঘুরতে আসা কিছু অভিজাত মানুষ এবং সার্কের ৮ দেশের ছেলেমেয়েরা, যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন।

প্রচণ্ড গরম কিংবা কনকনে ঠাণ্ডা, সারারাত পাওয়া যেত তাকে। তবে আমরা অনেকেই গুপ্তাজির আসল নাম বা ঠিকানা জানি না। জানার প্রয়োজনও হয়নি কখনো। কারণ, সদা হাস্যেজ্বল একজন মানুষ গুপ্তাজি। সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সঙ্গেই তার দারুণ ভাব। কখনো কারো কাছে চায়ের জন্য পয়সা না থাকলেও তিনি ফিরিয়ে দেননি। পড়াশুনার চাপে ক্লান্ত শিক্ষার্থীরাও চা পান করতে প্রায় সারারাত ধরেই দল ধরে যাওয়া-আসা করতেন গুপ্তাজির দোকানে।

গত বছরের শেষের দিকে সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় কৰ্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, তারা এই অস্থায়ী ক্যাম্পাস ছেড়ে দক্ষিণ দিল্লির ময়দানঘুড়িতে নবনির্মিত ১০০ একরের স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে যাবে। খবরটি কানে যায়  গুপ্তাজিরও। এই খবরে তার খুশি হওয়ার কথা না। তবে, এই উপলক্ষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটা অফার দিয়েছিলেন। অস্থায়ী এই ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে তিনি শিক্ষার্থীদের ফ্রিতে একদিন স্ন্যাকস এবং চা পান করাতে চেয়েছিলেন। সেই নিমন্ত্রণের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন আমার এক বন্ধু, যিনি সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পিএইচডি করছেন।

শিক্ষার্থীরা গুপ্তাজির এই নিমন্ত্রণে খুব খুশি হলেও ফ্রিতে চা পান করতে যাননি। কারণ, গুপ্তাজির এত বেশি আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। প্রতিদিন তার বিক্রি হতো ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার রুপি। এর থেকে আয়ের টাকা দিয়েই তার সংসার চলে। যদি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের  হোস্টেলে থাকা ৩০০ শিক্ষার্থীকে কেবল একদিন চা পান করাতে চান, তার মোট খরচ হবে অন্তত ৪ হাজার রুপি এবং এই টাকার মধ্যে তার বিনিয়োগের টাকাও রয়েছে। পরবর্তীতে বিনিয়োগ সংকটে ভুগতে হতে পারতো গুপ্তাজিকে। তারপরও তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এত দিনের সম্পর্কের খাতিরে এই অফার দিয়েছিলেন।

এবার আসি আসল প্রসঙ্গে। গত বছর সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটা যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের স্কলারশিপের টাকা না বাড়িয়ে বরং কমিয়ে দিয়েছিল। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, স্কলারশিপ ও আর্থিক অনুদান না কমিয়ে যেন বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'যৌন হয়রানি নিরূপণ কমিটি'তে যেন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। গত ১৩ অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করেছিলেন।

এই আন্দোলন দমন করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন অমান্য করে একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে আনে এবং গত নভেম্বরে বাংলাদেশের ১ পিএইচডি শিক্ষার্থীসহ মোট ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে। এরপরে আরও কিছু শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, এই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিপন্থী আচরণ করেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি লিখে জানান, যে প্রক্রিয়ায় এই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। কোনো নিয়ম না মেনে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা না বলেই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট।

এরপরে ৭ নভেম্বর প্রায় সব দেশের কিছু শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। এর মধ্যে বহিষ্কৃত ভারতীয় শিক্ষার্থী অমর আহমেদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়। অমর পরবর্তীতে সুস্থ হলেও এখনো তিনি ভালো ভাবে কথা বলতে পারেন না।

এর মধ্যে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, ভারতীয় লোকসভার একাধিক সদস্য, ভারতীয় কম্যুনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি এবং দেশ-বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠন এই যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছেন, যেন শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয় এবং তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়।

গত ৩০ ডিসেম্বর ৫ শিক্ষককে চিঠি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্টকে চিঠি দেওয়া, নিয়ম ভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে উসকে দেওয়া, মার্ক্সবাদী স্টাডি সার্কেল নামের একটি গ্রুপের সঙ্গে হাসপাতালে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে যাওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এরই মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি) গঠন করে এবং গত ১৯ মে ওই ৫ শিক্ষককে তদন্তের নামে প্রেসিডেন্টের রুমে ডেকে আনেন। তাদেরকে ১৩২ থেকে ২৪৬টি প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয়। প্রশ্নগুলো এমনভাবে সাজানো ছিল যেন উত্তর দিলে বা না দিলেও তাদের ফাঁসানো যায়। তাছাড়া, সারাদিন রুমে বন্দি রেখে তদন্ত কমিটির সামনে কাগজে-কলমে উত্তর দেওয়ার এই প্রক্রিয়াকে তাদের কাছে অপমানজনক মনে হয়। তারা সেখান থেকে চলে আসেন এবং প্রেসিডেন্টের কাছে অনুরোধ করেন প্রশ্নগুলো ইমেইলের মাধ্যমে পাঠাতে। এ বিষয়ে তারা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখাও করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট তাদের সঙ্গে দেখা করেননি।

গত ১৬ জুন ৪ জন শিক্ষকের—সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ড. রবি কুমার, ড. ইরফানুল্লাহ ফারুকি, অর্থনীতি বিভাগের ড. স্নেহাশীষ ভট্টাচার্য এবং আইন অনুষদের শ্রীনিভাস বুড়া—বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্য করার অভিযোগ এনে তাদেরকে বহিষ্কার আদেশ পাঠানো হয়। তাদের অফিস খালি করতে বলা হয় এবং সমস্ত প্রদেয় সুযোগ-সুবিধা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়।

এ ঘটনা জানাজানি হলে গোটা ভারতের উচ্চ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়সহ ভারতের প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক-ছাত্র সংগঠনগুলো থেকে নিন্দা জানানো হয়। সেইসঙ্গে লিখিত প্রতিবাদ জানানো হয় এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাতে এখন পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কেন এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই দাম্ভিক আচরণ? এর প্রধান কারণ সার্কের অকার্যকর ভূমিকা। সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য যে গভর্নিং বডি রয়েছে, তার সর্বশেষ সভা হয়েছে ২০১৭ সালে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চুক্তি অনুযায়ী ৫০ শতাংশ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী-কর্মকর্তা নিয়োগ হবে ভারত থেকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ অপর ৭ দেশ থেকে নেওয়া হবে। এ ছাড়া, পরিচালনা ব্যয়ও আসবে প্রত্যেক দেশ থেকে। সার্ক অকার্যকর হওয়ায় অনেক দেশ আর তাদের ভাগের টাকা নিয়মিত দিচ্ছে না। আবার বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় প্রশাসনিক পদের প্রায় ৯৫ শতাংশ এখন ভারতীয় শিক্ষকদের দখলে।

১৯৮৫ সালে সার্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আজ পর্যন্ত এই আঞ্চলিক অংশদারিত্বের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে সফল প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি বা সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে শিক্ষার্থীরা অনেক বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, ২০১৩ সালে ক্ষমতাপ্রাপ্ত একটি কমিটি স্কলারশিপ বৃদ্ধির বিষয়ে সুপারিশ করলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। অনেক শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হলেও শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ বৃদ্ধিতে কোনো ভূমিকা নেয়নি প্রশাসন। অনেক শিক্ষক দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট যানবাহনের বরাদ্দ বাবদ অনেক টাকা নিয়েছেন ফান্ড থেকে, যা অবৈধ। অবশ্য শিক্ষকদের এই দাবি কতটুকু সত্য, সেটা আমরা জানি না।

২০১০ সালের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি খুব স্বল্প সময়ে অনেক নাম কুড়িয়েছে। পড়াশুনার মান দক্ষিণ এশিয়ার অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এখানে অনেক ভালো। ভারতের প্রতিটি রাজ্য থেকে এবং সার্কের বাকি দেশগুলো থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসেন। সারা পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রীধারী শিক্ষক এখানে পড়ান। সেমিনার ও কর্মশালায় পৃথিবীর খ্যাতনামা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এখানে অংশ নেন। সমৃদ্ধ একাডেমিক পরিবেশ এবং বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশুনার সুযোগ পান।

দিল্লিতে বসে একজন শিক্ষার্থী দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি, রাজনীতি, জীবনযাপন, দর্শন, ভাষা, অর্থনীতিসহ নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভের সুযোগ পান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন।

শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে দমাতে অযৌক্তিক পথ বেছে নিয়েছেন সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিতর্কিত পন্থায় শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছেন। বর্তমানে অধ্যয়নরত সব শিক্ষার্থীই মানসিকভাবে চাপে রয়েছেন। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন কিছু শিক্ষক। কর্তৃপক্ষ তাদেরও সম্প্রতি বহিষ্কার করেছেন।

এমন স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত প্রশাসন কীভাবে নিয়েছে, তার জবাবদিহিতা দাবি করা সার্ক দেশগুলোর জন্য সময়ের দাবি বলে মনে করছি। মনে রাখতে হবে, এটি কোনো স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটি কমন ক্যাম্পাস। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হলে সার্কের সব দেশেরই ক্ষতি হবে।

দিল্লির একজন চা-ওয়ালার যে ভদ্রতা জ্ঞান রয়েছে, তার বিপরীতে ৮টি দেশ প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণ কেন এত অসহিষ্ণু—সেটা খুঁজে দেখার দায়িত্ব এই ৮টি দেশের সরকারের।

মোস্তফা সবুজ সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং দ্য ডেইলি স্টারে কর্মরত সাংবাদিক।

mostafashabujstar@gmail.com

Comments

The Daily Star  | English

$14b a year lost to capital flight during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

13h ago