বিউটি পার্লারে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনে নিজেকে একটু পরিপাটি করে উপস্থাপন করতে পারা দক্ষতার ব্যাপার। এতে যেমন আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে তেমনি কাজের মধ্যেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। নিজেদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজটা আগেকার দিনে ঘরোয়াভাবেই করা হত। কিন্তু এখন আমরা অনেকেই এই দায়িত্বটা বিউটি পার্লারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু সেখান কি আমরা মানসম্মত সেবা পাচ্ছি? বিউটি পার্লারের অদক্ষতা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে নানা স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি আমরা।

অধিকাংশ সময় পার্লারে যেসব চিরুনি ও ব্রাশ ব্যবহার করা হয় সেগুলো জীবাণুমুক্ত প্যাকেটে রাখা হয় না। আগের ব্যবহারকারীর কাছ থেকে এসব চিরুনি ও ব্রাশে খুশকি, ছত্রাক এমনকি উকুন থাকতে পারে। পরিষ্কার না করে রাখলে তা পার্লারে আসা অন্যদের মধ্যেও ছড়াতে পারে।

মেকআপের স্পঞ্জ, টাওয়েল, ফেসিয়ালের ড্রেস ব্যবহারের পর ভালোমতো পরিষ্কার না করলে তা থেকে পরবর্তী ব্যবহারকারীর মাথা বা ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষ করে একজিমা, ডার্মাটাইটিস, একনির মত চর্মরোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি থাকে।

হতাশাজনক হলেও সত্য যে আমরা অনেকেই বাড়িতে একজনের টাওয়েল, চিরুনি ও ব্রাশ অন্যজন ব্যবহার না করলেও পার্লারে এটা মেনে চলা সম্ভব হয় না। এসব নিয়ে কাউকে আপত্তিও তুলতে দেখা যায় না। দেখা যায় আগের গ্রাহকের ব্যবহার করা চিরুনি জীবাণুমুক্ত না করে বা চুল ভালোমতো পরিষ্কার না করে ব্যবহার করা হচ্ছে। মেক আপের জন্য ব্যবহার করা স্পঞ্জও সাবান দিয়ে ধুয়ে রাখা হয় না।

বেশিরভাগ সময় পেডিকিউর বা মেনিকিউরের সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত প্লাস্টিকের পাত্রে রাখা হয় না। পেডিকিউর ও মেনিকিউরের একই জিনিসপত্র সবার জন্যই ব্যবহার করা হয়। এর ফলে কারও নখে ছত্রাকের সংক্রমণ থাকলে তা থেকে পার্লারের অন্যান্য গ্রাহকদেরও সংক্রমিত করার আশঙ্কা থাকে। এমন অসতর্কতার ফলে এইচআইভি/এইডস পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

পার্লারের ভেতরেও নানা সমস্যা থাকে। অল্প একটু জায়গায় অনেক গ্রাহককে বসে থাকতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় সেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলেরও ব্যবস্থা থাকে না। একই ঘরে দেখা যায় কারও চুলে স্প্রে করা হচ্ছে, কেউ স্টিম নিচ্ছেন আবার কারও চুল শুকানো হচ্ছে। এতে অ্যালার্জি, হাঁপানি ও শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের আশঙ্কা বাড়ে।

এসব বিষয় নিয়ে বিউটি পার্লার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বেশিরভাগ সময়ই তারা গ্রাহকের ভিড় থাকার বিষয়টি অজুহাত হিসেবে দেখান। তারা এটা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে প্রচুর গ্রাহক হওয়ার করণে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত জিনিসপত্র ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যায় না।

বিউটি পার্লার ব্যবসার সঙ্গে বিশাল সংখ্যক নারী যুক্ত থাকলেও তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের খুব কম সুযোগ থাকে। সিটি করপোরেশন থেকে একটা ট্রেড লাইসেন্স ব্যবস্থা করতে পারলেই বিউটি পার্লার খুলে বসা যায়। সময়ের সাথে সাথে এসব পার্লারে গ্রাহক বাড়লেও সেবার মান না বেড়ে বরং আরও কমে যায়।

বিউটি পার্লারে গিয়ে ক্ষতির শিকার হলে যে কেউ ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’ মোতাবেক বিচার চাইতে পারেন।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

3h ago