গাজায় অনেক মানুষ না খেয়ে আছে: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

গাজার অনেক মানুষ ক্ষুধার্ত। অনাহারে আছে। এমনটাই বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গতকাল সোমবার ট্রাম্পের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ট্রাম্প মন্তব্য করেন, মানবিক ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের আরও ইতিবাচক ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণের প্রবাহ বাড়াতে 'কৌশলগত যুদ্ধবিরতি' ও নিরাপদ করিডোর চালুসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।

তা সত্ত্বেও, এখনো গাজার ফিলিস্তিনিরা তাদের সন্তানদের জন্য একমুঠো খাবার জোগাড় করতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

রাফায় ত্রাণকেন্দ্র থেকে মানবিক ত্রাণ পেয়েছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। ছবি: এএফপি
রাফায় ত্রাণকেন্দ্র থেকে মানবিক ত্রাণ পেয়েছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। ছবি: এএফপি

গাজার দুই বছরের যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার ছুঁইছুঁই। এই পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগে ফিলিস্তিনিরা প্রাণ হারাচ্ছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

ক্ষুধার্ত ও অনাহারে থাকা শিশুদের ছবি বিশ্ববাসীকে উৎকণ্ঠায় রেখেছে এবং ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে।

গাজার মানুষ ক্ষুধার্ত থাকার বিষয়টিকে 'বাস্তবতা' বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। অথচ রোববার ট্রাম্পের মিত্র ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, 'গাজায় কোনো ক্ষুধার্ত মানুষ নেই'। পাশাপাশি তিনি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। 

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য তাকে নেতানিয়াহুর বচনের বিপরীত দিকে বসিয়েছে, যা বেশ বিরল। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলেছেন ট্রাম্প।

পরবর্তীতে সোমবার দিনের শেষে নেতানিয়াহু স্বীকার করে নেন, 'গাজার পরিস্থিতি বেশ জটিল'। তিনি জানান, তার দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে।

নেতানিয়াহু বলেন, 'আন্তর্জাতিক সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে, যাতে গাজা উপত্যকায় বড় আকারে মানবিক ত্রাণের প্রবাহ বাড়ানো যায়।'

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুল্ক আলোচনার জন্য স্কটল্যান্ড সফরে আছেন ট্রাম্প। তিনি সেখান থেকে বলেন, ত্রাণের প্রবাহ নিশ্চিত করায় ইসরায়েলের অনেক বড় দায়িত্ব রয়েছে। দেশটি এই দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে অনেক মানুষ প্রাণে বাঁচবে।

'সেখানে অনেক অভুক্ত মানুষ আছে', যোগ করেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, 'আমরা সেখানে খাদ্য বিতরণকেন্দ্র স্থাপন করব'। এই কেন্দ্রগুলোতে কোনো বেড়া বা বেষ্টনী থাকবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করে গাজার মানুষের কাছে খাবার ও স্যানিটারি পণ্যের মতো বিভিন্ন ধরনের মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেবে।

হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র জানান, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের বিষয়ে শিগগির বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

কৌশলগত যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও সোমবার গাজায় দিনভর ইসরায়েলি হামলায় ৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪১ জন ত্রাণ নিতে যেয়ে ইসরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত হন।

খান ইউনিসের শরণার্থী শিবির। ছবি: এএফপি
খান ইউনিসের শরণার্থী শিবির। ছবি: এএফপি

তাদের মধ্যে ১৪ জন অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগে প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে, এই যুদ্ধে ক্ষুধাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ১৪৭ জনের, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'ক্ষুধাকে অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগের তীর ছুঁড়েছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু নেতানিয়াহু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দরকষাকষি বা যুদ্ধ, যেটাই করুক না কেন, গাজায় ত্রাণের প্রবাহ বন্ধ হবে না।

Comments

The Daily Star  | English
july charter draft by national consensus commission

July Charter runs into a snag

Jamaat, NCP and IAB have voiced reservations about the draft while BNP has expressed partial agreement with the proposed reforms

10h ago