শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে মালয়েশিয়া: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: স্টার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত নির্দেশনা অনুযায়ী বিগত কয়েকদিন ধরে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীদের সঙ্গে দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় তার ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে আইন উপদেষ্টা এ কথা জানিয়েছেন।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, 'দুইদিন আগে মালয়েশিয়ায় তিনজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে এবং বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকগুলোর ফলে বেশ কিছু অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।'

আইন উপদেষ্টা বলেন, 'গত বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত বন্ধু। তাদের মধ্যে সাক্ষাৎকালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে গত বছর যে শ্রমিকরা শেষ মুহূর্তে মালয়েশিয়া যেতে পারেনি, তাদেরকে তিনি মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ করে দেবেন। এর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৭ হাজারের মতো। প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে এবং মালয়েশিয়ার মন্ত্রীরা জানিয়েছেন তারা ব্যাচ ভিত্তিতে শ্রমিক নেবেন।'

প্রথম ব্যাচ হিসেবে তারা সাত হাজার ৯২৬ জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদেরকে মালয়েশিয়া কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে এবং ইতোমধ্যে এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি যে মালয়েশিয়া এক থেকে দেড় লাখ বিদেশি শ্রমিক নিতে পারে। লোক নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে মালয়েশিয়ার হিউম্যান রিসোর্স মিনিস্টার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। বাংলাদেশ থেকে ওনারা সব থেকে বেশি লোক নেবেন এই আশ্বাস আমরা পেয়েছি।'

তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছিলাম যে বাংলাদেশে যে রিক্রুটিং এজেন্টগুলো আছে, তাদের জন্য যেন উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, যেন সবাই লোক পাঠানোর সুযোগ নিতে পারে এবং তারা এ প্রস্তাবটি ভালোভাবে বিবেচনা করে অচিরেই একটি সিদ্ধান্ত জানানোর ব্যাপারে আমাদের জানিয়েছেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, 'আমাদের আরেকটা বড় অগ্রগতি যেটা হয়েছে, সেটা হলো মালয়েশিয়ার ইন্টেরিয়র মন্ত্রীকে আমরা অনুরোধ করেছিলাম যে, অন্য দেশের শ্রমিকরা পেলেও আমাদের শ্রমিকরা মাল্টিপল ভিসা পায় না। এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে এবং আলোচনাকালে সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং আমি বলেছি মালয়েশিয়ায় যে শ্রমিক ভাইরা অনিয়মিত হয়ে গেছেন, তাদেরকে রেগুলাররাইজ অথবা বৈধ করা যায় কি না সে ব্যাপারে কী করা যায়। ওনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই বিষয়টিকে নিয়ে তারা আলাদাভাবে ভেবে দেখবেন।'

আরও কিছু বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি যেমন, সিকিউরিটি গার্ড অথবা কেয়ারগিভার বা নার্স ইত্যাদি পেশায় দক্ষ লোকবল হিসেবে বাংলাদেশিদের নেওয়া যায় কি না এবং এ ব্যাপারে তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন। এর সব বিষয় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

আইন উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা আশাবাদী এবং এতটা ফলপ্রসূ যে একটি আলোচনা হলো এতে ব্যক্তিগতভাবে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা আছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, বৈঠকে বসছেন এবং তার কথা মতোই আমরা কাজ করছি।'

প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি তার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও এতে যুক্ত আছেন জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, 'তারও এখানে অনেক অবদান আছে। আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যারা আছেন, তারা কয়েক মাস ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিষয়গুলো এগিয়ে নেওয়ার জন্য।'

খুব শিগগিরই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য কল্যাণকর কিছু পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি দেশবাসীর কাছে এ বিষয়ে দোয়া চান।

Comments

The Daily Star  | English

How Chattogram built its economic legacy

Picture a crowded harbour where the salty seabreeze carries whispers of far-off lands, where merchants of all creed and caste haggle over silks and spices, and where towering ships of all varieties – Chinese junks, Arab dhows, and Portuguese carracks – sway gently in the waters of the Bay of Bengal.

12h ago