মারা গেছেন নোবেল বিজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা

পেরুর নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা। ফাইল ছবি: এএফপি
পেরুর নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা। ফাইল ছবি: এএফপি

পেরুর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস ইয়োসা (৮৯) মারা গেছেন। তিনি মূলত স্প্যানিশ ভাষায় লিখতেন।

আজ সোমবার মারিও বার্গাসের পরিবারের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।

শুধু সৃষ্টিশীল সাহিত্য নয়, তিনি গুরুত্ব পেয়েছেন তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী রচনার জন্যও।

রোববার সামাজিক মাধ্যম এক্সে তার ছেলে আলভারো বার্গাস ইয়োসা একটি পারিবারিক বিবৃতি প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, 'গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার বাবা মারিও বার্গাস ইয়োসা আজ লিমায় মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণ মৃত্যু হয়েছে তার।' 

বার্গাস ইয়োসার স্মরণীয় উপন্যাসের মধ্যে আছে 'কনভারসেশন ইন দ্য ক্যাথেড্রাল (১৯৬৯)', 'দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৮১)' এবং 'আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার (১৯৭৭)'।

আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার বইয়ের কাহিনী অনুসারে ১৯৯০ সালে নির্মিত হয় 'টিউন ইন টুমরো' নামের সিনেমাটি। এতে অভিনয় করেন কিয়ানু রিভস ও বারবারা হারশি। 

২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল জয় করেন বার্গাস ইয়োসা। সুইডিশ অ্যাকাডেমি তার শক্তিশালী লেখনীর ভূয়সী প্রশংসা করে।

রোববারের বিবৃতিতে তার তিন সন্তান জানান, বার্গাস ইয়োসার প্রয়াণে 'তার আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও বিশ্বজুড়ে তার পাঠকরা শোকে নিমজ্জিত হবেন।'

'তবে আমরা আশা করব আমাদের মতো তারাও এটা জেনে স্বস্তি পাবেন যে তিনি (ইয়োসা) একটি দীর্ঘ, ঘটনাবহুল ও ফলপ্রসূ জীবনযাপন করেছেন এবং মৃত্যুর আগে অসংখ্য সাহিত্যিক সৃষ্টি রেখে গেছেন, যা তাকে অমর করে রাখবে', যোগ করেন তারা।

পেরুর প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যম এক্সে পোস্ট করে বার্গাস ইয়োসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

দেশটির প্রেসিডেন্টও তার নিজ অ্যাকাউন্টে ব্যক্তিগত শোকবার্তা প্রকাশ করেছেন।

পেরুর দক্ষিণাঞ্চলের আরেকিপায় জন্ম নেন বার্গাস ইয়োসা। তার প্রথম জীবন কাটে বলিভিয়ার কোচাবাম্বায়। সেখানে তার দাদা পেরুর কনসাল হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন মারিও বার্গাস ইয়োসা। ফাইল ছবি: এএফপি (২০১০)
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন মারিও বার্গাস ইয়োসা। ফাইল ছবি: এএফপি (২০১০)

পরবর্তীতে তিনি সামরিক স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং পেরুর রাজধানী লিমায় স্যান মার্কোস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

১৯৫২ সালে তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। সেটা ছিল 'লা গাইড দেল ইনকা' নামের একটি নাটক।

পেশায় সাংবাদিক ও ব্রডকাস্টার ছিলেন বার্গাস ইয়োসা। প্যারিসে বসবাস শুরুর আগে তিনি মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

১৯৬৩ সালে প্রকাশ পায় তার প্রথম উপন্যাস 'লা সিউদাদ ই লস পেররোস'। ইংরেজিতে এটি 'দ্য টাইম অব দ্য হিরো' নামে পরিচিত, যা পাঠকদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়।

পরবর্তীতে এক ডজনেরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয় এই গ্রন্থটি।

লন্ডনে কিছুদিন কিংস কলেজে শিক্ষকতা করার পর ওয়াশিংটন ও বার্সেলোনায় কিছুদিন থেকে ১৯৭৪ সালে লিমায় ফেরেন তিনি।

১৯৯০ সালে পেরুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েছিলেন মারিও বার্গাস ইয়োসা।

তবে দ্বিতীয় দফার ভোটে ভরাডুবি হয় তার—হেরে যান আলবের্তো ফুজিমোরির কাছে। তখন তিনি স্পেনে অভিবাসন করেন। ১৯৯৩ সালে স্পেনের নাগরিকত্ব নেন তিনি। এক বছর পর স্পেনের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার সেরভান্তেস জেতেন তিনি।

২০১০ সালে নোবেল জয়ের পর তিনি আয়োজকদের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার অনুপ্রেরণা হিসেবে ফরাসি লেখক গুস্তাভে ফ্লবার্ত এর নাম উল্লেখ করেন।

Comments

The Daily Star  | English
Exporters to get Tk 108.5 for a dollar from Aug 1

Taka gains against dollar after several years

Taka gains ground as dollar influx rises, strengthening currency after years

2h ago