মাঠের ভেতরে-বাইরে হামজাই নেতৃত্ব দিয়েছেন, বলছেন মোরসালিন

বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ঠাঁই হয়নি একাদশে, ফলে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিলো তপু বর্মণের কাঁধে। সেই তপুও চোটে পড়ে শুরুতেই মাঠ ছাড়েন। রহমত মিয়ার কাঁধে আর্মব্যান্ড পরা থাকলেও মূলত নেতা ছিলেন হামজা চৌধুরী। পুরো ৯০ মিনিট তিনিই দলকে বলতে গেলে পরিচালনা করেছেন। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও নেতার ভূমিকা নেন হামজা। দেশে ফিরে হামজার সঙ্গে খেলাকে জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা আখ্যা দিয়ে বলেন তরুণ তারকা শেখ মোরসালিন।
শিলং থেকে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশের রাজধানীতে দীর্ঘ যাত্রা শেষে সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে মোরসালিন বলেন, 'ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে ভালো, কিন্তু মাঠে আমাদের শক্তি প্রায় একই। আমরা মঙ্গলবার আবারও তা প্রমাণ করেছি। উদ্বোধনী ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট অর্জন করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।'
'আমাদের পরিকল্পনা ছিল তিন পয়েন্ট অর্জন করা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা শুরু থেকেই তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা মুভগুলো শেষ করতে পারিনি। আমার মনে হয় আমরা যদি গোল করতে পারতাম, তাহলে আরও গোল আসত।'
এই মিডফিল্ডার বলেন নিজেদের রক্ষণেও তারা ছিলেন নিখুঁত, 'তবে, আমরা গোল খাইনি, কারণ আমরা দল হিসেবে ভালো ডিফেন্স করেছি, এটাও গুরুত্বপূর্ণ।'
গুরুত্বপূর্ণ ব্লক এবং ট্যাকল করা থেকে শুরু করে আক্রমণাত্মক মুভ শুরু করা পর্যন্ত। মোরসালিন হামজার অভিষেক পারফরম্যান্সকে অসাধারণ বলে অভিহিত করেছেন, 'হামজার সঙ্গে খেলা আমার জন্য একটি বড় অভিজ্ঞতা ছিল। আমার মনে হয় এটি আমার ফুটবল ক্যারিয়ারের সেরা অভিজ্ঞতা কারণ তিনি মাঠের ভেতরে এবং বাইরে একজন অসাধারণ পারফরমার। হামজা মূলত বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কারণ তিনি প্রতিটি খেলোয়াড়কে কী করতে হবে এবং কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে তা নির্দেশ দিয়েছেন'
'তিনি আমাকে তাকে অনুসরণ করতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং আমি তার নির্দেশ অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। তিনি কতটা বড় খেলোয়াড় তা আমি আপনাদের বোঝাতে পারব না।' যোগ করেন মোরসালিন
মোরসালিন বলেন, শুধু মাঠেই নয়, শিলংয়ের ভিভান্ত মেঘালয় হোটেলে হামজার পাশের রুমে থেকে তিনি হামজার সঙ্গ থেকেও উপকৃত হয়েছেন, 'যেহেতু আমরা ৭ ও ৮ নম্বর জার্সি পরি, তাই আমাদের রুমগুলোও একে অপরের পাশে ছিল। তিনি আমাকে অনেক তথ্য দিয়েছেন, যা তিনি অন্য খেলোয়াড়দেরও দিয়েছেন। হামজার কোনো অহংকার না থাকায় তাকে কখনো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় মনে হয়নি।'
বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত শুরু করে প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করে, কিন্তু মজিবুর রহমান জনি বা শাহরিয়ার ইমন কেউই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। মোরসালিন নিজেই ইমনের সামনে একটি ফ্রি-হেডার দিয়েছিলেন, কিন্তু ইমন সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন, 'আমি ইমনের জায়গায় থাকতে পারতাম। ইমন লাফ না দিলে, তপু (বর্মন) ভাই সহজেই বলটি পেতে পারতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি খেলার অংশ।'
বসুন্ধরা কিংসের এই মিডফিল্ডার আরও যোগ করেন যে অধিনায়ক এবং সেন্টার-ব্যাক তপু খেলার শুরুতে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে মাঠ ছাড়ার পর তারা চাপে পড়েছিলেন।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে আগামী ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তারা কী অর্জন করতে চান জানতে চাইলে মোরসালিন বলেন, 'এখন আমরা আমাদের ক্লাবের জন্য সামনের ঘরোয়া ম্যাচগুলোতে মনোযোগ দিতে চাই এবং তারপর ম্যাচটি কাছে এলে পরের ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করব।'
Comments