কুয়েট ভিসির বাসভবনে তালা, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৯৮তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় 'রক্তাক্ত কুয়েট' শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীর পর শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা উপাচার্য মোহাম্মদ মাছুদের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

শিক্ষার্থীরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারির সহিংস ঘটনার চিত্র তুলে ধরে এই প্রদর্শনী আয়োজন করেন। তারা জানান, শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে তা যেন ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা না হয়, তার প্রমাণস্বরূপ এই প্রদর্শনী।

প্রদর্শনীর পর এক ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ছয় দফা দাবি ছিল, যার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি সিন্ডিকেট সভায় কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। 

তারা বলেন, 'এই সিদ্ধান্ত আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। আমাদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।'

ছবি: সংগৃহীত

এরপর রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে উপাচার্যকে নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা তাকে যথাযথ সম্মান দিয়েছি। কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না যে আমরা তার গায়ে হাত তুলেছি।'

তারা আরও বলেন, 'সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা এখনো কার্যকর করা হয়নি। এটি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।'

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন দাবি করেছে যে তারা পাঁচটি দাবি মেনে নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

ছবি: সংগৃহীত

'প্রকৃতপক্ষে আমাদের কেবল আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রশাসন যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো প্রতিনিধি নেই। তাই আমরা এই কমিটিকে বিশ্বাস করি না', বলেন এক শিক্ষার্থী।

তারা আরও বলেন, 'ছাত্রদল ও বিএনপির সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে। ভিডিও ফুটেজ ও ছবি থাকার পরও প্রশাসন চুপ রয়েছে। এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপহাস ছাড়া কিছু নয়। আমাদের আন্দোলন থামানোর জন্যই এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা বাধ্য হয়েই উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়েছি।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের মূলত ছয়টি দাবি ছিল। কিন্তু সিন্ডিকেট কিছু দাবি এড়িয়ে গিয়ে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আমাদের আন্দোলন চলবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আজ সন্ধ্যার পর আমরা উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। এই ভবনে থাকার আর কোনো অধিকার নেই তার।'

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে স্থানীয় কিছু বহিরাগত এই হামলায় অংশ নেয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
rickshaws banned on Dhaka's main roads

Rickshaws no longer allowed on main roads: DNCC

More than 100 illegal battery-powered rickshaws were seized during the joint operation

2h ago