কারখানা বন্ধ, তবুও এক মাসে শেয়ারের দাম ৩ গুণ

খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড (কেপিপিএল) জাঙ্ক স্টক হিসেবে পুঁজিবাজারে 'জেড' ক্যাটাগরিতে পড়ে আছে। বছরের পর বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ। সাম্প্রতিক সময়ে এর কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি না হওয়া সত্ত্বেও গত মাসে শেয়ারের দাম তিনগুণ বেড়েছে।

গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়ে জবাব দেয় কেপিপিএল।

ডিএসইর তথ্য বলছে—গতকাল মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে ২০ টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে। গত মাসের সাত টাকা দুই পয়সা থেকে তিনগুণ বেশি।

গত বছরের আগস্টে ডিএসই জানিয়েছিল, তাদের একটি প্রতিনিধি দল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেপিপিএলের কারখানা ও প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে এর পরিচালন পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে।

মূলত ২০২১ সালে ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কারণে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ আছে।

সে বছরই কেপিপিএল জানিয়েছিল, চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সম্প্রতি, গুজব উঠে যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়া হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির উত্পাদন আবার শুরু হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের কোনো অগ্রগতির বিষয় নিশ্চিত করেনি।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহসভাপতি সাজেদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যদি প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক হিসাব ফিরে পায় তাহলে ধরে নেওয়া যেতে পারে ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের কারণে শেয়ারের দাম বাড়ছে।'

ইনসাইডার ট্রেডিং হলো গোপনীয় তথ্য দেখে নিজের স্বার্থে অবৈধ লেনদেন।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সতর্ক থাকলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা গুজবের পেছনে ছুটছেন। কেউ কেউ ভুল তথ্য ছড়িয়ে পরিস্থিতিকে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'সাধারণত এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লোকসানে পড়েন। তাই এ ধরনের শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত।'

২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম দুই বছর ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু গত চার বছরে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যাংক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকে, তখন এর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ না থাকলেও এর কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।'

'বিনিয়োগকারীদের এটা ধরে নেওয়া উচিত নয় যে, প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরুর পরই লভ্যাংশ দেওয়া শুরু করবে।'

তার মতে, যদি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ থাকে তবে এসব গুজব বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

'বিনিয়োগকারীদের যৌক্তিক আচরণ করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত থাকলেও বাজারে অনেক ভালো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কম দামে পাওয়া যায়।'

'এসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। যখন আপনার কাছে আরও সুরক্ষিত বিনিয়োগের বিকল্প আছে, তখন কেন গুজবভিত্তিক শেয়ার কিনবেন?'

'কিছু মানুষ দ্রুত মুনাফা চায়। এটি পুঁজিবাজারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।'

Comments

The Daily Star  | English

First phase of Ijtema ends with ‘Akheri Munajat’

The final prayer was conducted by Maulana Zubair, top spiritual leader of Shura-e-Nezami, Bangladesh

1h ago