বিপিএল

নাহিদের তোপে ঢাকাকে হারের বৃত্তেই রাখল উড়ন্ত রংপুর

ছবি: স্টার

নাহিদ রানার তোপের পাশাপাশি জ্বলে উঠলেন বাকি বোলাররা। তাদের সম্মিলিত অবদানে ধুঁকতে থাকা ঢাকা ক্যাপিটালসকে অল্পতে বেঁধে ফেলল রংপুর রাইডার্স। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় কোনো বেগ পেতে হলো না ছন্দে থাকা দলটির। অ্যালেক্স হেলস ও খুশদিল শাহর ঝড়ের সুবাদে বড় জয় তুলে নিল তারা।

বিপিএলে মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ঢাকাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা ১৬.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় ১১১ রানে। জবাবে ৪০ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে রংপুর। এবারের আসরে দুই দলের প্রথম দেখাতেও শেষ হাসি হেসেছিল তারা। গত ৩০ ডিসেম্বর মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে তাদের জয় ছিল ৪০ রানে।

এই নিয়ে পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে জিতল নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন রংপুর। পূর্ণ ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা মজবুত করেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান। অন্যদিকে, থিসারা পেরেরার নেতৃত্বাধীন ঢাকা এখনও জয়হীন। চার ম্যাচ খেলে শূন্য ঝুলি নিয়ে তাদের অবস্থান তলানিতে। এদিন তারা একাদশে ছয়টি পরিবর্তন আনলেও কোনো সুফল মেলেনি।

ম্যাচসেরার পুরস্কার গেছে রংপুরের তরুণ পেসার নাহিদের ঝুলিতে। এমনিতে গতির ঝড় তুললেও এই ম্যাচে সেই রূপে দেখা যায়নি তাকে। নয় দিনের মধ্যে পাঁচ ম্যাচ খেলার ধকল ফুটে ওঠে তার বোলিংয়ে। তার বেশিরভাগ ডেলিভারিই ছিল ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির নিচে। তবে সফল হওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করে বল হাতে ৪ ওভারে ২১ রান খরচায় তিনি নেন ৩ উইকেট। প্রথম ওভারে চারটি ওয়াইডসহ ১২ রান দেওয়ার ধাক্কা সামলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ান তিনি।

রংপুরের হয়ে ব্যাট হাতে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন আগের দিন সেঞ্চুরি হাঁকানো হেলস। ইংলিশ ওপেনার ২৭ বলে চারটি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কা হাঁকান। অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখান পাকিস্তানের খুশদিল। ১৩ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ২৭ রানে অপরাজিত থাকার আগে ২ ওভারে ১৪ রানে ২ উইকেট পান তিনি।

হারের বৃত্তে বন্দি ঢাকার শুরুটা ছিল আগ্রাসী। একাদশে ফেরা হাবিবুর রহমান সোহান ও সকালে সিলেটে পৌঁছানো জেসন রয় মিলে ৩ ওভারে আনেন ২৮ রান। কিন্তু কেউই ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে স্লগের চেষ্টায় বোল্ড হন সোহান। ১২ বলে তিনটি চারে তার রান ১৪। পাওয়ার প্লের শেষ বলে শেখ মেহেদীর শিকার হন রয়। বোল্ড হওয়ার আগে ইংলিশ ব্যাটার ১২ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় করেন ১৮ রান।

পজিশন পাল্টে তিনে নামা তানজিদ হাসান তামিমও ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। তিনিও আশা জাগিয়ে বোল্ড হন ইফতিখার আহমেদের বলে। তিনটি চার ও একটি ছক্কায় তার রান ২০।

নিয়মিত উইকেট খোয়াতে থাকলেও ঢাকার রান তোলার গতি ছিল ভালো। মূলত, অতি আগ্রাসন দেখাতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনে তাদের টপ অর্ডার। ৭ ওভারে ৩ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৬২ রান ওঠায় পরের ব্যাটারদের সুযোগ ছিল ভিতকে কাজে লাগিয়ে দলকে ভালো পুঁজি দেওয়ার। কিন্তু তারা হন ব্যর্থ।

প্রায় দুই বছর পর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা সাব্বির রহমান করেন ৭ বলে ২ রান। তাকে বিদায়ের পরের ডেলিভারিতে থিসারাকেও আউট করেন খুশদিল। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো ঢাকার অধিনায়ক ১ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। ২০১৬ সালের পর প্রথমবার বিপিএলে তিন নম্বরের নিচে নামা লিটন দাস রানখরা কাটাতে পারেননি। চারে নেমে নাহিদের শর্ট বলে ক্যাচ দেন তিনি। তার রান ১৩ বলে একটি চারে ৯।

২০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানো ঢাকা একশ পার হয় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আলাউদ্দিন বাবুর কল্যাণে। ড্রাফটের বাইরে থেকে দল পাওয়া মোসাদ্দেক এবার প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ৯ বলে একটি ছক্কায় ১২ রান করেন। ১৬ বলে দুটি চারে ১৬ রান করা আলাউদ্দিনকে সাজঘরে পাঠিয়ে তৃতীয় শিকার ধরেন নাহিদ।

মোস্তাফিজুর রহমানকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে ঢাকার দুর্দশার ইতি ঘটান আকিফ জাভেদ। ২১ বল বাকি থেকে থামে দলটি। পাকিস্তানের পেসার জাভেদ ৩.৩ ওভারে ২ উইকেট নিতে দেন ১৩ রান। একটি মেডেনও নেন তিনি।

অনায়াস রান তাড়ায় চতুর্থ ওভারে আজিজুল হাকিম তামিমকে হারায় রংপুর। টানা তৃতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউটের শঙ্কা ছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কের সামনে। সেটা দূর করতে পারলেও সাবলীল ছিলেন না তিনি। আউট হন ১৪ বলে ৫ রানে।

এরপর সাইফ হাসানকে নিয়ে ৩০ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়েন হেলস। তাণ্ডব চালিয়ে সমীকরণ আরও সহজ করার পাশাপাশি ফিফটির দিকে এগোচ্ছিলেন হেলস। বড় শট খেলতে গিয়ে তিনি ধরা পড়েন মোসাদ্দেকের বলে সাব্বিরের হাতে। ফর্মে থাকা সাইফ থিতু হতে না পেরে ১৫ বলে একটি চারে ১৩ করে থামেন। এরপর ইফতিখারকে নিয়ে ২১ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন খুশদিল।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

5h ago