হোপ মার্কেটে যা পাবেন, দাম যেমন
মিরপুরের হোপ মার্কেট বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারীদের কাছে এ মার্কেটের জনপ্রিয়তা বেশি। কম দামে থ্রি-পিস, জামা, জুতা, ব্যাগ, সাজগোজের জিনিসসহ নানা বাহারি পণ্য পাওয়া যায় এই মার্কেটে।
মার্কেটের ইতিহাস
স্থানীয়রা জানান, হোপ স্কুলের গলিতে হওয়ায় এর নাম হোপ মার্কেট। তবে বর্তমানে এর আশপাশের কয়েকটি রাস্তা পর্যন্ত এ মার্কেট বিস্তৃত। হোপ মার্কেট ২০১০ সাল থেকে জনপ্রিয়তা পায়। আশেপাশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে এখানে কয়েকটি দোকান বসেছিল। যেগুলোর ক্রেতা ছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। কিন্তু সুলভমূল্যে বিভিন্ন পণ্য পাওয়ায় বর্তমানে এখানে শুধু মিরপুরের বাসিন্দারাই না, ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই আসেন এ মার্কেট।
যা যা পাওয়া যায় ও দাম
মেয়েদের প্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসই এখানে পাওয়া যায়। বিশেষ করে টপস, জিনস, গজ কাপড়, শীতের পোশাক, ব্যাগ, জুয়েলারি। এ ছাড়াও গৃহস্থালি বিভিন্ন জিনিসও মেলে এখানে।
জিনস ও টপস
এখানে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন রকমের জিনস-টপস পাওয়া যায়। এ ছাড়া বাহারি নকশার সুতি, লিনেন ও জর্জেটের কুর্তা, কামিজও পাওয়া যায় ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায়। পাশাপাশি কাফতান, লং শার্ট পাওয়া যায় ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ১০০ থেকে ২০০ টাকায় সুতি, জর্জেট ও বাটিকের ওড়না এবং স্কার্ফ পাওয়া যায়।
গজ কাপড়
বিভিন্ন ডিজাইন ও বাহারি রকমের গজ কাপড়ও পাওয়া যায় এখানে। ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা গজে পাওয়া যায় এসব কাপড়।
জুতা
সাশ্রয়ী দামে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে এখানে জুতাও কিনতে পারবেন। মাত্র ১২০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় পেয়ে যাবেন বিভিন্ন হিল, স্নিকার্স ও স্লিপার। এ ছাড়াও চুমকি, জরি ও বিভিন্ন কারুকাজ করা ওজনে হালকা ও দেখতে নজরকাড়া নাগরা জুতা পাওয়া যায় ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
জুয়েলারি ও সাজগোজের জিনিস
এখানে বেশ কয়েকটি সাজগোজের জিনিসের দোকানও রয়েছে। দোকানগুলোতে ১০০ টাকায় টিপ, কাজল, আইলাইনার, লিপস্টিক, লিপলাইনার পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন রকমের জুয়েলারিও রয়েছে, যা অত্যন্ত কাম দামে পাবেন। ছোট ছোট কানের দুল পাওয়া যায় ২০ থেকে ৫০ টাকায়। ঝুমকা পাওয়া যায় ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। অ্যান্টিক ও পাথরের মালা ১০০ থেকে ২৫০ টাকায়৷ এ ছাড়াও কাচ ও অ্যান্টিকের চুড়ি ৫০ টাকা ও ১০০ টাকায় পাওয়া যায়।
ব্যাগ
মার্কেটে বেশ কয়েকটি ব্যাগের দোকানও রয়েছে। যেখানে ১০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিভিন্ন ধরনের হাতব্যাগ ও পার্স পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন কথা, লেখা ও ছবি আঁকা টোটব্যাগও পাওয়া যায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। সেইসঙ্গে স্কুল ব্যাগও পাওয়া যায়।
সিরামিকের তৈজসপত্র
হোপ মার্কেটের পাশেই ভ্যান গাড়িতে সিরামিকের বিভিন্ন জিনিস বিক্রি হয়। নান্দনিক এসব বাসনকোসনের দাম খুবই সাশ্রয়ী। বিভিন্ন ধরনের মগ, কাপ পাওয়া যায় ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে হাফ প্লেট ও প্লেট পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ছোট-মাঝারি আকারের বাটি পাওয়া যায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
শীতের পোশাক
শীতের সময়ে এখানে শীতের কাপড় পাওয়া যায়। ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিভিন্ন রকমের শাল পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় জিনসের জ্যাকেট ও ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্য বিভিন্ন রকমের সোয়েটার পাওয়া যায়। এ ছাড়াও উলের সোয়েটারও রয়েছে।
এসবের পাশাপাশি হোপ মার্কেটে বিছানার চাঁদর, ফুলের দোকান, বিভিন্ন লেইস, ফিতাও পাওয়া যায়। এখানে স্ট্রিট ফুডেরও বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে।
অবস্থান ও খোলার সময়
রাজধানী ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে পূর্ব দিকে ৫ মিনিটের হাঁটা পথেই হোপ মার্কেটের অবস্থান। স্থানটি 'হোপের গলি' নামেও পরিচিত। ঢাকার যে কোনো জায়গা থেকে বাস, রিকশা বা গুগল ম্যাপের নির্দেশনা অনুসরণ করে সহজেই আসা যায়।
হোপ মার্কেট সপ্তাহের সাত দিনই খোলা থাকে। সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ মার্কেট চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। তবে সন্ধ্যার পর থেকে দোকানগুলোর আলোকসজ্জা এবং স্ট্রিট ফুড স্টলগুলোর কারণে পরিবেশ আরো জমজমাট হয়ে ওঠে।
সতর্কতা
ছুটির দিন ও সন্ধ্যার পর হোপ মার্কেটে খুবই ভিড় থাকে। তাই ভিড় এড়াতে চাইলে এ সময়গুলোতে এড়িয়ে চলতে পারেন। এ ছাড়া ভিড়ের কারণে এখানে ছোট বাচ্চা না নিয়ে যাওয়াই ভালো।
Comments