এবার পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৯ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

পাগলা মসজিদে দানবাক্স থেকে পাওয়া টাকা গণনা চলছে। ছবি: স্টার

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে মিলেছে রেকর্ড ২৯ বস্তা টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। তিন মাস ১৩ দিন পর আজ শনিবার সকালে মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হয়।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমতের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৭টায় ১১টি দানবাক্স খোলা হয়। প্রথমে টাকাগুলো লোহার দানবাক্স থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে ঢেলে গণনা শুরু হয়। এই কাজ করছেন প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী, ব্যাংকের ৭০ জন কর্মী, মসজিদ কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সেনাবাহিনীর সদস্য মিলে প্রায় সাড়ে তিনশ জন।

দানবাক্স খোলার সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারাসহ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূইয়া।

ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অবস্থান কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদী তীরে। এই মসজিদের লোহার দানবাক্সগুলো প্রতি তিন থেকে চার মাস পর পর খোলা হয়। মসজিদটিতে এর আগে নয়টি দানবাক্স থাকলেও এবার দুইটি বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়েছিল এ বছরের ১৭ আগস্ট। তখন ২৮ বস্তায় ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। তবে এবার আরও বেশি টাকা হবে বলে কর্তৃপক্ষের আশা।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত তিন থেকে চার মাস পর পর দানবাক্স খোলা হয়। সারা দিনেও টাকা গুনে শেষ না করতে পারায় এবারও পাশের একটি মাদ্রাসা থেকে ১৫৩ জন শিক্ষার্থীকে গণনার কাজে আনা হয়েছে।

টাকা ছাড়াও মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য ভক্ত।

প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তাদের বিশ্বাস, এখানে দান করলে মনের আশা পূরণ হয়। এ কারণেই দিন দিন দানের পরিমাণ বাড়ছে।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, পাগলা মসজিদের দানের টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এখান থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত সমস্ত টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। গণনার দিন ছাড়াও বাকি দিনগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন দানবাক্সের নিরাপত্তায় থাকেন।

Comments

The Daily Star  | English
Exporters to get Tk 108.5 for a dollar from Aug 1

Taka gains against dollar after years

Taka gains ground as dollar influx rises, strengthening currency after years

1h ago