পাগলা মসজিদের দানের সিন্দুকে এবার ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা

ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৮টি দান সিন্দুকে এবার ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া গেছে ।

সিন্দুকগুলো ৩ মাস ২০ দিন পর গতকাল শনিবার খোলা হয়। সিন্দুকগুলোতে পাওয়া ১৬ বস্তা টাকা দিনভর গণনা করা হয় ।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ছবি: সংগৃহীত

টাকা গণনার সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম মোস্তফা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে এলাহী, শফিকুল ইসলাম, উবায়দুর রহমান সাহেল, মাহবুব হাসান, সিরাজুল ইসলাম, সুশান্ত সিংহ, নাবিলা ফেরদৌস, ফাতেমা তুজ জোহরা, কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ ও পাগলা মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান।

এর আগে সর্বশেষ গত ১২ মার্চ পাগলা মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।

ছবি: সংগৃহীত

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক খোলা হয় এবং সন্ধ্যায় টাকা গণনার কাজ শেষ হয়।

মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। এছাড়াও করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছে এ দানের টাকা থেকে।

মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন জানান, এই মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয় এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করেন।

ছবি: সংগৃহীত

জনশ্রুতি আছে, কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের মৃত্যুর পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

পরে সেখানে এলাকার ও দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলংকারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই এ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। এই ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানায় স্থানীয়রা।

বর্তমানে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি গড়ে উঠেছিল।

মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রসারিত হয়েছে মূল মসজিদ ভবনও। মসজিদটিকে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামিক কমপ্লেক্সে করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

  

Comments

The Daily Star  | English

Will protect investments of new entrepreneurs: Yunus

Yunus held a meeting with young entrepreneurs at the state guest house Jamuna where15 male and female entrepreneurs participated

5h ago