শততম উইকেট নিয়ে ১১৪ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন প্রবাথ
ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি স্লগ সুইপ করে সীমানার বাইরে পাঠাতে চাইলেন টনি ডি জর্জি। বড় শট খেলার এমন চেষ্টায় বিপদ ডেকে আনলেন এর আগ পর্যন্ত দেখেশুনে ব্যাট চালাতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার। তাকে কৌশলে পরাস্ত করে শততম টেস্ট উইকেটের দেখা পেলেন প্রবাথ জয়সুরিয়া। ১১৪ বছর ধরে টিকে থাকা রেকর্ড ভেঙে শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি স্পিনার উঠলেন চূড়ায়।
ডারবানে বৃহস্পতিবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ইতিহাস গড়েন প্রবাথ। টেস্ট ক্রিকেটে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে দ্রুততম ১০০ উইকেটের কীর্তি এখন তার। এই মাইলফলকে পৌঁছাতে দরকার পড়ে মাত্র ১৭ টেস্ট। ৯৭ উইকেট নিয়ে খেলতে নামা প্রবাথ প্রথম ইনিংসে শিকার করেন ২৪ রানে ২ উইকেট। তাই স্রেফ ১ উইকেটের অপেক্ষা ছিল। প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম আঘাত করেই রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি।
প্রবাথ পেছনে ফেলেছেন ইংল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার কলিন ব্লাইথ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিনার আলফ ভ্যালেন্টাইনকে। ১৯ টেস্টে ১০০ উইকেট নিয়ে এতদিন যৌথভাবে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন তারা। ১৯১০ সালের ডিসেম্বরে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই শততম উইকেটের স্বাদ পেয়েছিলেন ব্লাইথ। ১৯৫৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জর্জটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার পাশে বসেছিলেন ভ্যালেন্টাইন।
সব ধরনের বোলার মিলিয়ে টেস্টে দ্রুততম ১০০ উইকেটের রেকর্ড জর্জ লোহম্যানের। ইংল্যান্ডের পেসারের লেগেছিল ১৬ টেস্ট। অর্থাৎ মাত্র এক টেস্টের জন্য তাকে ছুঁতে পারেননি প্রবাথ। তিনি যৌথভাবে দুইয়ে আছেন আরও চারজনের সঙ্গে। তারা হলেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার চার্লি টার্নার, ইংল্যান্ডের পেসার সিডনি বার্নস, অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার ক্ল্যারি গ্রিমেট ও পাকিস্তানের লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ১০০ উইকেট পাওয়া চতুর্থ লঙ্কান স্পিনার প্রবাথ। সবার উপরে আছেন অফ স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। ৮০০ উইকেট নিয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড তার দখলে। বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ ৪৩৩ এবং অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরা ১৬১ উইকেট নিয়েছেন।
দিনের বাঁহাতি ডি জর্জি ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটিয়েছিলেন ঠিকঠাকই। কিন্তু ফিল্ডারের নাগালের বাইরে রাখতে পারেননি। ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা আসিথা ফার্নান্দো ডানদিকে সরে অনায়াসে বল লুফে নেন। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠেন ৩৩ বছর বয়সী প্রবাথ। টেস্টে ১০০ উইকেট স্পর্শ করতে মাত্র ২ বছর ১৪২ দিল নেন তিনি। ২০২২ সালের জুলাইতে ঘরের মাঠে গলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই সংস্করণে অভিষেক হয়েছিল তার।
ডি জর্জিকে আউটের পর ভিয়ান মুল্ডারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন প্রবাথ। প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে বোল্ড করেন আসিথা। দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ১৩২ রানে। শুক্রবার ম্যাচের তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৩৩ রানে পৌঁছে গেছে তারা। হাফসেঞ্চুরি তুলে ট্রিস্টান স্টাবস ও টেম্বা বাভুমা যথাক্রমে ৭০ ও ৬৪ রানে খেলছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার লিড এখন বেড়ে হয়েছে ৩৮২ রান।
Comments