চট্টগ্রামে আরও ৩ গুদাম থেকে অবৈধ সিগারেটের সরঞ্জাম জব্দ

জব্দ করা বিদেশি সিগারেটের পেপার ও অবৈধ সিগারেট স্ট্যাম্প। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হালিশহর ও নয়াবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপুল পরিমাণ বিদেশি সিগারেট পেপার ও অবৈধ সিগারেট স্ট্যাম্প জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা এবং কাস্টমস ভ্যাটের একটি দল।  

গতকাল বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার টানা দুইদিনের এ অভিযানে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিগারেট পেপারও জব্দ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) সাবেক কাউন্সিলর আবদুস সবুর লিটন ও তার ভাই আব্দুল মান্নান খোকন এসব গুদামের মালিক বলে জানা গেছে।

তবে আবদুস সবুর লিটন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এসব পণ্যের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কে কারা এগুলো সেখানে রেখেছে তা আমি জানি না।'

বৃহস্পতিবার রমনা আবাসিক এলাকার আল ফরিদ ভবনে অভিযানে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার পিস সিগারেট স্ট্যাম্প, ১৪৮টি সাদা বড় রোল, ৪২৫টি সাদা ছোট রোল, ১২৬টি কালো বড় রোল ও ১ হাজার ৩৭টি কালো ছোট রোল জব্দ করা হয়। এছাড়াও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিগারেট পেপারও পাওয়া যায়।

এ ভবনের পাশেই আপন নিবাসে সপরিবারে বসবাস করতেন লিটন ও তার ভাই।

গত জুনে দ্য ডেইলি স্টার 'কাউন্সিলরের অবৈধ সিগারেট বাণিজ্য' নামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর কাস্টমস গোয়েন্দার তৎকালীন মহাপরিচালক ফখরুল আলমকে প্রধান করে একটি অনুসন্ধান কমিটি করে এনবিআর।

কমিটির আহ্বায়ক ফখরুল আলমের নির্দেশে এ অভিযান পরিচালনা করেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের যুগ্ম-পরিচালক সাইফুর রহমান। পুরো তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করছেন এনবিআর সদস্য (কাস্টমস পলিসি) হোসেন আহমেদ।

হোসেন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কাছে যেসব তথ্য আছে সব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে চারটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব জায়গায় অভিযান চলমান আছে।'

কমিটির আহ্বায়ক ফখরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জব্দ করা সিগারেট পেপার ও অন্যান্য সরঞ্জাম দেখে মনে হয়েছে বেনসন, ব্ল্যাক, ওরিস, ইজি লাইটসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট বানানো হতো। এছাড়া অবৈধ স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোলও পাওয়া গেছে।'

২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে একই মালিকের দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে জব্দ করা ব্যান্ডরোলের চালানের সঙ্গে অভিযানে পাওয়া ব্যান্ডরোলের সম্পর্ক আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ তখন ১৩ কনটেইনার ব্যান্ডরোল ফাঁকি দিয়ে খালাস হওয়ার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল।

অভিযানে অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কাস্টমস গোয়েন্দার যুগ্ম-পরিচালক সাইফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত পরিমাণ বলা যাবে। এতে কী পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল তা বের করা সম্ভব হবে।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, 'এই দুটি কোম্পানি ওরিস ও ইজি লাইটসের মতো বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেটের নকলসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করছে, যা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে বিক্রি করা হচ্ছে।'

দ্য ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে দেশের অবৈধ সিগারেট বাজারের একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ও তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো। এ দুই প্রতিষ্ঠানের বড় অংশের মালিক লিটন ও তার ভাই।

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

5h ago