নাটোরে ওএমএসের চাল ও আটা বিতরণে দুর্নীতি

নাটোরে ওএমএসের (ওপেন মার্কেট সেল) চাল ও আটা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়েছে।

সম্প্রতি নাটোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হঠাৎ পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পান।

নথি অনুযায়ী, শহরের কানাইখালী এলাকার ডিলার আমজাদ আলী ২০০ জনের মধ্যে এক টন চাল ও এক টন আটা বিতরণ করেছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পরিদর্শনকালে দেখা যায়, তিনি বিতরণ ৯০ কেজি চাল (৩০ কেজির তিন বস্তা) ও ১০০ কেজি আটা (৫০ কেজির দুই ব্যাগ) দোকানের ভেতরে রেখে দিয়েছেন। পরবর্তীতে ওই চাল ও আটা জব্দ করা হয়।

নাটোরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রেজাউল ইসলাম খন্দকার বলেন, 'পরবর্তীতে ওই ডিলারকে ৯০ কেজি চাল ও ১০০ কেজি আটা কম বরাদ্দ দেওয়া হবে।'

অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সব সময় উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও, তাদের অনুপস্থিতিতে ওএমএস কর্মসূচির চাল-আটা বিতরণ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কানাইখালীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হাসান মনসুর জানান, বিতরণের সময় তিনি দাপ্তরিক কাজে কিছুক্ষণ বাইরে ছিলেন। তার পরের বাকি সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন।

শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে চাল-আটা বিতরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নাটোর জেলা কমিটির সভাপতি খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, 'গরিবের জন্য বরাদ্দকৃত চাল-আটা বিতরণ না করে মজুত করে খোলা বাজারে বিক্রি করা গুরুতর অপরাধ। এই ধরনের অপরাধের শাস্তি না দিয়ে শুধুমাত্র চাল-আটা বাজেয়াপ্ত করা অপরাধকে ক্ষমা করার সমান। তা ছাড়া, ট্যাগ অফিসার উপস্থিত না থাকা হলো দায়িত্বে অবহেলা। অভিযুক্ত ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিল এবং কর্মকর্তাদের শাস্তি না হওয়া মানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও দুর্নীতিতে জড়িত। তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।'

নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এবং ওএসএম কর্মসূচির সভাপতি মো. মাছুদুর রহমান বলেন, 'বণ্টনে অনিয়ম-দুর্নীতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

নাটোর সদর উপজেলার বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম জানান, তার দেখাশোনা করার কেউ নেই। ওএমএসের চাল কিনতে দুই দিন ৩০০ টাকা ব্যয় করেও খালি হাতে ফিরে গেছেন তিনি।

বনবেলঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা রাজু আহমেদ বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় তার মতো দিনমজুরের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন তিনি ওএমএস কর্মসূচির চাল-আটাও পাচ্ছেন না।

এই ব্যাপারে দৃষ্টি তিনি তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

1h ago