নীরবে দেশ ছাড়ছেন ইসরায়েলের উদারপন্থি ও ধর্মনিরপেক্ষদের অনেকে

গাজায় হামলার এক বছর পূর্তিতে জেরুসালেমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে ইসরায়েলিদের বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি

যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে ইসরায়েলের অভিজাত উদারপন্থি ও ধর্মনিরপেক্ষদের একটি অংশ দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ডাক্তার, প্রযুক্তিবিদদের মাঝে দেশ ছাড়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। 

রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। 

গার্ডিয়ান জানায়, গতবছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলে মানুষের মধ্যে রক্ষণশীল চিন্তাভাবনা অনেক বেড়েছে। দেশের সিংহভাগ নাগরিকই যুদ্ধের পক্ষে। যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া নাগরিকরা তাই সামাজিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। 

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা শুরু হওয়ার পর দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া দ্রোর সাদত গার্ডিয়ানকে জানান, ইসরায়েলে নেতানিয়াহু-বিরোধী একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী রয়েছে। কিন্তু বামপন্থী লিবারেলদের মাঝেও অনেকে প্রতিশোধের কথা বলছেন। গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড দেখে বলছেন, 'এটা কেবলই একটা যুদ্ধ'। 

গত এক বছরে কতজন ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছেন, তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধের আগেই ৩০ থেকে ৪০ হাজার ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছেন নেতানিয়াহুর বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে বিরক্ত হয়ে।

ইসরায়েলের নোবেলজয়ী অধ্যাপক আহারন চিহানোভার দাবি করেন, ধর্মনিরপেক্ষ ইসরায়েলিদের মাঝে নীরবে দেশ ছাড়ার প্রবণতা অনেক বাড়ছে। তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, 'একে আমরা নীরব প্রস্থান বলি। কারণ তারা বিমানে উঠার আগ পর্যন্ত কাউকে কিছু জানাবে না।'

ইসরায়েলের সার্বিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থিদের সংখ্যাও কমছে। ২০১৫ সালে এক সমীক্ষায় ৪৫ শতাংশ ইসরায়েলি নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ দাবি করেছিলেন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা ৪০ শতাংশে নেমে আসে। গত এক বছরে তা আরও কমেছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অতিরক্ষণশীল ইহুদিদের চাপে উদারপন্থিদের একটি অংশ দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানায় গার্ডিয়ান। 

Comments