নতুন কারখানা স্থাপনে ৮১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে কনফিডেন্স সিমেন্ট

নরসিংদী, কনফিডেন্স সিমেন্ট, সিমেন্ট শিল্প, নির্মাণ,

নরসিংদীর দশ একর জমিতে নতুন কারখানা স্থাপনে ৮১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে চট্টগ্রামভিত্তিক সিমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসি।

এদিকে গত কয়েক মাসের মধ্যে সিমেন্ট বিক্রি প্রায় অর্ধেক নেমে এসেছে। কারণ দেশে সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর বেশিরভাগ বেসরকারি ও সরকারি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে।

ঠিক সেই মুহূর্তে নতুন করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিমেন্ট কোম্পানিটি।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশে এক ধরনের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই এখন অনেক উন্নয়ন প্রকল্প স্থগিত বা বাতিল করা হতে পারে।

কনফিডেন্স সিমেন্টের কোম্পানি সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, চট্টগ্রামে তাদের বর্তমান কারখানা কেবল ওই অঞ্চলে চাহিদা মেটাতে পারে। তাই নতুন কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেড' নামে নতুন এই কারখানার নির্মাণ কাজ শেষ হলে দৈনিক ছয় হাজার টন নির্মাণ সামগ্রী উৎপাদন সম্ভব হবে।

তিনি আরও জানান, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে কার্যক্রম শুরু হলে এই কারখানায় প্রায় এক হাজার লোকের সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

তিনি বলেন, 'কারখানা নির্মাণের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।'

বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে প্রায় ৩০টি কারখানা রয়েছে, যেখানে সম্মিলিতভাবে প্রতি বছর প্রায় সাত কোটি ৮০ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদন করা সম্ভব। যেখানে চাহিদা রয়েছে প্রায় চার কোটি টন।

মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ১৩টি ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৭০ শতাংশ অর্থায়ন করছে। বাকি অর্থ কোম্পানির ইক্যুইটি থেকে পরিশোধ করা হচ্ছে।

প্রাইম ব্যাংক পিএলসির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেট ক্যাপিটাল মার্কেটের প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, তারা সিন্ডিকেটেড ব্লেন্ডেড ক্রেডিট সুবিধার মাধ্যমে লিড অ্যারেঞ্জার হিসেবে ৫৫৮ টাকার শেয়ার সংগ্রহ করেছে।

বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেড জ্বালানি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দশ বছর মেয়াদী ঋণ সহায়তা দিচ্ছে।

এদিকে বাকি দশটি ব্যাংক ও দুটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাড়ে সাত বছর পর্যন্ত।

মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৪ সালে কনফিডেন্স সিমেন্টের যাত্রা শুরু হয়। দেশীয় সিমেন্ট উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি অগ্রগামী।

তার ভাষ্য, 'কিন্তু পরিবহন ও বিতরণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির সিমেন্ট পণ্য সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ সিমেন্টের চাহিদার বেশিরভাগই ঢাকাকেন্দ্রিক, কারণ বেশিরভাগ বেসরকারি ও সরকারি নির্মাণ কাজ রাজধানীতে হয়ে থাকে।

তিনি জানান, এ প্রেক্ষাপটে কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকার অর্থায়নকারীরা নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় বার্ষিক ১৮ লাখ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন উৎপাদন কারখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই ইউনিটে ভার্টিক্যাল রোলার মিলের মতো সিমেন্ট তৈরির সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী শীর্ষস্থানীয় জার্মান প্রতিষ্ঠান লোয়েশের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি থাকবে।

তিনি বলেন, 'আমাদের মূল্যায়নে দেখা গেছে, প্রকল্পটি বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়ায় আমরা এতে অর্থায়ন করছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Digital dreams, disconnected realities

A deep-rooted divide in access to devices, internet connectivity, and digital literacy separates rural communities from urban counterparts

15h ago