গণঅভ্যুত্থানের বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা উচিত না: আসিফ নজরুল

গণঅভ্যুত্থানের বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা উচিত না: আসিফ নজরুল
আসিফ নজরুল | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা উচিত না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার ড. আসিফ নজরুল।

আজ শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা ডাকার পরে স্থগিত প্রসঙ্গে মতামত জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, 'প্রধান বিচারপতি ফুল কোর্ট মিটিং ডেকেছিলেন। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আমি একটি স্ট্যাটাস দেখেছি, আসিফ মাহমুদ বলেছে উনি কারও সঙ্গে আলোচনা করেননি। মনে করা হচ্ছে, এটি স্বৈরাচারী পরাজিত শক্তির পক্ষের একটি মুভ।'

তিনি বলেন, 'প্রধান বিচারপতি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়, উনার কিছু ব্যাপারে প্রশ্ন ছিল, বিশেষ করে যখন এই আন্দোলনটা হচ্ছে তখন উনি প্রশ্ন করেছিলেন—আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন করা যায় কি না? এটি মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। এছাড়া একটি জিনিস ছিল খুব দুঃখজনক, উনি প্রধান বিচারপতি হওয়ার পথে ছাত্রলীগের কাছ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা নিয়েছেন। আমার ব্যক্তিগত অভিমত এটি কোড অব কন্ডাক্টের লঙ্ঘন ছিল এবং এটি খুব ভালো ইমপ্রেশন দেয় না।

'ডিবি (পুলিশের গোয়েন্দা শাখা) প্রধান, যারা সম্পর্কে নানা প্রশ্ন রয়েছে এবং উনি এই ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করা, আটকে রাখার মূল ব্যক্তি ছিলেন। ডিবি প্রধানের কাছ থেকে উনি সোনার তরবারি উপহার নিয়েছিলেন। আমার তখন খুব অবাক লেগেছিল। উনি বিদেশে গেলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের বাসায় থাকেন। এসব কারণে উনাকে নিয়ে এমনিতেই কনট্রোভার্সি ছিল। মামলাটা চলাকালে যখন উনি এই কমেন্ট করেন—এত কীসের আন্দোলন! রিঅ্যাক্ট করেছেন। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে তার পদত্যাগের দাবি উঠেছিল, আজকে সেটা আবারও বলা হয়েছে, যেহেতু উনি ফুল কোর্টের মিটিং ডেকেছেন। এটা একটি অনভিপ্রেত ঘটনা। এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটলেই ভালো,' বলেন তিনি।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, 'সুপ্রিম কোর্ট আমাদের সংবিধান-মানবাধিকার রক্ষার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টকে দাঁড় করানোর চেষ্টা কারও করা উচিত না। আপনারা দেখেছেন, পুলিশ বাহিনীকে গণআন্দোলনের বিপক্ষে দাঁড় করানোর কী পরিণতি হয়েছে। এ রকম কিছু হোক আমরা কখনোই চাইবো না। আমরা আশা করব, সবার যেন শুভ বুদ্ধির উদয় হয় এবং ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের প্রতি সবাই যেন সম্মান দেখাই।'

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে আইনগত সংস্কার করে, উপযুক্ত জায়গায় উপযুক্ত ব্যক্তিদের পদায়ন করে আমার এখতিয়ারভুক্ত ব্যাপারে যা যা করার আছে, আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করব।'

যত দ্রুত সম্ভব বিচারকার্য শুরু করা হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, 'গণআন্দোলন থেকে পদত্যাগের দাবি উঠলে সেটাকে কতটুকু সম্মান প্রদর্শন করতে হয় সেটা আমাদের প্রধান বিচারপতি বুঝতে পারবেন বলে আমার প্রত্যাশা থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

With Trump’s win, Bangladesh gets more investment queries from China

Chinese entrepreneurs are increasingly inquiring with Bangladeshi businesses over scope for factory relocations, joint ventures and fresh investments, apprehending that the new Trump administration might further hike tariffs on their exports to the US.

9h ago