খুলনায় এখন যা চলছে

বিকেল থেকেই বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। ছবি: স্টার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার বিকেল থেকে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে খুলনা মহানগর। বিকেল থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে যাচ্ছে পুলিশ।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। অন্যদিকে গল্লামারী ব্রিজের কাছে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

সন্ধ্যার পর থেকে পুরো নগরীতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে আহত বিক্ষোভকারীদের অ্যাম্বুলেন্সে করে শহরের দিকে নিতে দেখা গেছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের কর্মসূচি ছিল মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শিববাড়ী মোড় গিয়ে সমাবেশ করা। কিন্তু মিছিল নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের অবরুদ্ধ করে ফেলে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হামলার কারণে পুরো খুলনা মহানগরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ছবি: স্টার

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গল্লামারী এলাকা থেকে দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা জানান, প্রতি ১০-১৫ সেকেন্ড পরপর পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থানরত বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে যাচ্ছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শহরের এক প্রান্তে হওয়ায়, মূল শহরের সঙ্গে গল্লামারী হয়ে একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বিভিন্ন দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘিরে রেখেছে।

গল্লামারী দিয়ে একটু পরপর অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে যাচ্ছে শহরের দিকে। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ২২ বিক্ষোভকারী আহত হয়ে সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ৯ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন।

শহরের ভেতরে থাকা বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করলেও, পুলিশের বাধায় তারা গল্লামারী পার হতে পারেনি। অপরদিকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিজিবি সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। 

জানতে চাইলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোজাম্মেল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শুরু টিয়ারশেল ব্যবহার করেছি।'

এর আগে, দুপুরে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভকারীরা শিববাড়ি মোড়ে জড়ো হলে পুলিশের তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল হয়ে গল্লামারীর দিকে যায়। 

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ টিয়ারশেল ছুঁড়লে ও লাঠিচার্জ করলে প্রায় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশ তখন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ও সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নেয়। আর সেসময় পুলিশ অবস্থান নেয় গল্লামারী ব্রিজে।

এরপর থেকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে অনবরত টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে এবং বিভিন্ন দিক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে অবস্থান নেয়। এতে একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।

  

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

5h ago