কনডেম সেল থেকে যেভাবে পালিয়েছিলেন ফাঁসির ৪ আসামি
বগুড়ায় গতরাতে কারাগারের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পালিয়ে যান। তবে এ ঘটনার দেড় ঘণ্টার মধ্যেই কারাগারের ৫০০ মিটার দূর থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।
তারা হলেন, কুড়িগ্রামের নজরুল ইসলাম মঞ্জুর, নরসিংদীর আমির হামজা, বগুড়ার কাহালুর মো. জাকারিয়া এবং বগুড়া সদরের ফরিদ শেখ।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী আজ বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে গতরাতে তারা কনডেম সেলের ছাদ কেটে কাপড়ের রশি বানিয়ে ছাদ থেকে নেমে পালিয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জেলখানার অদূরে বাজার থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।'
'জেল কর্তৃপক্ষ আমাদের বিষয়টি জানায় ৩টা ৫৬ মিনিটে। এরপর পুলিশের সব ফাঁড়ি এবং টহল দলকে অ্যালার্ট করে দেওয়া হয়। ভোর সাড়ে ৪টায় সদর ফাঁড়ির সব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পলাতক চার আসামিকে ধরে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়', বলেন এসপি।
সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, 'পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে জেল কর্তৃপক্ষ আবার মামলা করবে। এরপর তাদের আদালতে পাঠানো হবে।'
তবে আসামিদের কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে জেল সুপার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি এবং কারাগারে গিয়েও কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, 'জেলটি ব্রিটিশ আমলের। ছাদে কোন রড ছিল না। কাপড় দিয়ে উপরে উঠে তারা ছাদ ফুটো করে পালিয়েছে। ঘটনার পর আমি জেল পরিদর্শন করেছি এবং সামনে-পেছনে আরও ছয়টি নিরাপত্তা চৌকি বসাতে বলেছি।'
আসামিদের আটক অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সাব-ইন্সপেক্টর খোরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনা জানার পর আমরা সব জায়গায় খোঁজ নিতে শুরু করি। আমার মনে হয়, যেহেতু জেলখানা করতোয়া নদীর তীরে, সুতরাং তারা নদী ধরে পালানোর চেষ্টা করবে। সে কারণে শহরের চেলোপাড়া সেতুর পূর্ব পাশে অবস্থিত চাষি বাজার এলাকার দিকে চারজন কনস্টেবল নিয়ে যাই। গিয়ে দেখি চারজন নদীর পাড় থেকে উপরে উঠছেন। পরে তাদের আটক করলে পুলিশের আরও টিম সেখানে আসে।'
আটককৃতদের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর জেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া পলাতক আসামিদের ছবির দেখে তাদের শনাক্ত করা হয় বলে জানান তিনি।
Comments