পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ভুলে যেতে সরকার ষড়যন্ত্র করছে: সন্তু লারমা

ছবি: সংগৃহীত

টানা ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকেও বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

গতকাল শুক্রবার সকালে রাঙ্গামাটির রাজদ্বীপ এলাকায় সিএইচটি হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) নেটওয়ার্কের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের কার্যালয়ে হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পিসিজেএসএস চেয়ারম্যান সন্তু লারমা। উদ্বোধক ছিলেন মং সার্কেল চিফ সাচিংপ্রু চৌধুরী। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাঙ্গামাটির স্থানীয় সরকার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান, হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য সবির কুমার চাকমা।

এসময় সন্তু লারমা বলেন, 'সরকারের বিশেষ মহলের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৯০০ সালের শাসনবিধির যে সংশোধনী আনা হচ্ছে তা যথাযথ ও সঠিক নয়। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব বিলুপ্তির প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছু নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৬ বছরের মধ্যে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী গত ১৭ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন। কিন্তু এ চুক্তি বাস্তবায়নসহ কোনো বিষয়ে সরকারের যথাযথ ভূমিকা নেই।'

সন্তু লারমা বলেন, '১৯৯৭ সালে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল, সেটা যেন মানুষ ভুলে যায় সেজন্য শাসকগোষ্ঠী তথা সরকার ষড়যন্ত্র করছে। তার অংশ হিসেবে ২৬ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়নি। বরং চুক্তিকে ভুলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।'

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে ও ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলের বিরুদ্ধে তরুণ থেকে শুরু করে হেডম্যান (গ্রামপ্রধান) ও কারবারিসহ (গ্রামপ্রধান) সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

চাকমা সার্কেল চিফ রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, 'পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এটা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য হুমকি। এটি কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহতের ডাক আসলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'কিছু স্বার্থান্বেষী মহল, তারা গণতন্ত্র মানে না, তারা জুম্ম বা আদিবাসীদের অস্তিত্ব মানে না। শুধু একটি মামলা অথবা কোর্টের এক রায়ে আমাদের শেকড় উপড়ে ফেলা সহজ নয়।'

এসময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের এটর্নি জেনারেলের অবস্থান খুবই দুঃখজনক। এই শাসনবিধি বাতিল হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। এ আইন বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা।

সম্মেলন শেষে চিংকিউ রোয়াজাকে সভাপতি ও শান্তি বিজয় চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটি আগামী তিন বছর দায়িত্ব পালন করবে।

Comments

The Daily Star  | English

Nahid warns against media intimidation, vows stern action

The government will take stern action against those trying to incite violence or exert undue pressure on the media or newspapers, said Information Adviser Nahid Islam today

2h ago