শিশু শিক্ষার স্টার্টআপ ‘লাইট অফ হোপ’র ওয়ালি পেলেন সেরা উদ্যোক্তার পুরস্কার
শিশু শিক্ষা নিয়ে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ 'লাইট অফ হোপ' এর প্রতিষ্ঠাতা ওয়ালিউল্লাহ ভূঁইয়া সেরা উদ্যোক্তার পুরস্কার জিতেছেন।
১১তম জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য মেলার প্রথম দিন রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার দেন।
মেলা উপলক্ষে ২০২৩ সালের জন্য মাইক্রো, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও স্টার্টআপ খাতে ৭ উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পুরুষ ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ওয়ালিউল্লাহ তার প্রতিষ্ঠান লাইট অফ হোপ লিমিটেডে ৩-১০ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করেছেন, যেখানে শিশুরা উচ্চমানের গবেষণালব্ধ লার্নিং প্রোডাক্টস, কন্টেন্টস ও কোর্সের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
লাইট অফ হোপের মিডিয়া ফ্র্যাঞ্চাইজ গুফি থেকে শিশুদের জন্য কিছু জনপ্রিয় ক্যারেক্টার তৈরি করা হয়েছে, যেগুলো শিশুদের মাঝে সহানুভূতি, সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং মানসিক বুদ্ধিমত্তার বিকাশে সহায়তা করে। এই ক্যারেক্টারগুলোকে রেখে ওয়ালি কিছু শিশুতোষ গল্পের বই লিখেছেন। গল্পগুলোর অ্যানিমেশন ভিডিও টিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে লাখো শিশু বিভিন্ন দক্ষতা ও মূল্যবান জ্ঞান শিখতে পারছে।
লাইট অফ হোপ ২০১৭ সালে সৃজনশীল আফটার-স্কুল প্রোগ্রাম কিডস টাইম শুরু করে। এর মাধ্যমে শিশুদের জন্য অনলাইনে এবং নিজস্ব কেন্দ্রে সরাসরি বিভিন্ন কোর্স দেওয়া হয়। কিডস টাইমের মাধ্যমে এ পর্যন্ত মোট ৪ হাজারের বেশি শিশু কারুশিল্প, চিত্রাঙ্কন, গল্প তৈরি, ইংরেজি বলা এবং সিঙ্গাপুর ম্যাথ কোর্স সম্পন্ন করেছে।
টিচার্স টাইম নামে আরেকটি ব্র্যান্ড পরিচালনা করে লাইট অফ হোপ। এর মাধ্যমে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সরাসরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত এ উদ্যোগের মাধ্যমে ২০ হাজারের বেশি শিক্ষক ও এক লাখের বেশি অভিভাবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
শিশুদের মাঝে পড়ার দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য বয়স-উপযোগী বইসহ দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ৬২০টির বেশি গ্রন্থাগার স্থাপন করেছে লাইট অফ হোপ। 'পড়ুয়া' নামের এই প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে আড়াই লাখের বেশি শিশু এসব বই পড়তে পারছে।
লাইট অফ হোপের প্রতিষ্ঠাতা ওয়ালিউল্লাহ ভূঁইয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং জার্মানির দাদ স্কলারশিপ নিয়ে এনার্জি ও এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
২০১৮ সালে তিনি ইউনিলিভার গ্লোবাল ইন্ট্রাপ্রেনার অ্যাওয়ার্ড পান এবং যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাসটেইনেবল লিডারশিপ প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেন।
দেশের শিশুরা যেন বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার যোগ্য হয়ে ওঠে, এমন চিন্তা থেকে তিনি দেশে ফিরে শিশুদের জন্য কাজ শুরু করেন।
সেরা উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়ে ওয়ালিউল্লাহ বলেন, 'আমরা সম্ভবত বাংলাদেশের একমাত্র বেসরকারি উদ্যোগ, যারা শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করার কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের কাজের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই পুরষ্কার আমার পুরো দলকে উৎসাহিত করবে এবং আমাদের পণ্য ও সেবাগুলোকে বিশ্ব বাজারে তুলে ধরতে অনুপ্রাণিত করবে।'
Comments