‘আর কতদিন জঙ্গলে পালিয়ে থাকব’
বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ ও সরকারি ১৪টি অস্ত্র লুটের ঘটনায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর প্রতি নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বম জনগোষ্ঠীর লোকজন। তারা বলেন, কেএনএফের কর্মকাণ্ডের কারণে বমদের সবাইকে দোষারোপ করা যাবে না; কেএনএফ মানেই বম নয়, বম মানেই কেএনএফ নয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে বমদের অনেকেই জঙ্গলে পালিয়ে আছেন উল্লেখ করে তারা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। বম জনগোষ্ঠীর যাকে যেখানে পাওয়া যাচ্ছে, ধরে নিয়ে চালান করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা আর কতদিন প্রাণের ভয়ে খেয়ে না খেয়ে জঙ্গলে পালিয়ে থাকব?
আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় বান্দরবান উজানী পাড়া ইভেনজেলিক্যাল খ্রিষ্টান চার্চ প্রাঙ্গণে 'সাধারণ বম জনগোষ্ঠী' ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু প্ল্যাকার্ড হাতে অংশ নেন।
তাদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার, সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অধিকার তোমাদের (কেএনএফ) নাই। সন্ত্রাসবাদকে না বলি, দেশপ্রেমই আমাদের লক্ষ্য।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বমেরা এই দেশরই অংশ। আমাদেরও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। কেএনএফের কর্মকাণ্ডে বমদের সবাই সম্পৃক্ত নয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক।
গ্রেপ্তার হওয়া যাদের বিরুদ্ধে কেএনএফের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নেই মানববন্ধন থেকে তাদের মুক্তি দাবি করা হয়।
বম সংগঠনের নেত্রী ঙুন চুওয়ান বম বলেন, 'আমরা সংঘাত চাই না। শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। কিছু কেএনএফ সদস্যের জন্য নারী-পুরুষ সবাইকে গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বম ছেলে-মেয়েদের কেউই স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। তারা সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না।
লাল পেক থার বম বলেন, বম সম্প্রদায়ের লোকজন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, টাকা লুট ও পুলিশ-আনসারের ১৪টি অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ব্যাংক ম্যানেজার উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ও টাকা দেড় মাসেও উদ্ধার করা যায়নি। কেএনএফ সন্ত্রাসীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে।
Comments