৩০ বছরের মধ্যে চলতি এপ্রিলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ডিগ্রি বেশি

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেসব স্থানে গত সাতদিন ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, গত ৩০ বছরের একই সময়ের গড় তাপমাত্রার তুলনায় তা চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি বলে আবহাওয়া অফিসের তথ্য থেকে জানা গেছে।

২৩ এপ্রিলের ঢাকার গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু গতকাল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলতি বর্ষাপূর্ব মৌসুমে দেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনুভূত হচ্ছে আরও চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, 'আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়েও চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রার গরম অনুভূত হচ্ছে।'

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি নির্দিষ্ট তারিখে একটি স্থানের গড় তাপমাত্রা ৩০ বছরের তাপমাত্রার গড় করে গণনা করা হয়।

ঢাকা শহরের ২২ এপ্রিলের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এই বছরের ২২ এপ্রিল তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে, যা গড়ের চেয়ে চার ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বেড়েছে।

একই দিনে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোর, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলাগুলোর গড় তাপমাত্রা হলো ৩৫ দশমিক সাত, ৩৪ দশমিক সাত ও ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ গতকাল খুলনায় তাপমাত্রা গড়ের চেয়ে পাঁচ দশমিক নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস, যশোরে চার দশমিক নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস ও চুয়াডাঙ্গায় চার দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

গত ২১ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তবে জেলাটির এই দিনের গড় তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া ৭২ ঘণ্টার 'হিট অ্যালার্ট'র সময় শেষ হচ্ছে আগামীকাল সকালে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এল নিনোর প্রভাবে এই তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে, যা বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রভাব ফেলছে এবং এটি এই মাসের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জুলি অ্যান রাইগলি গ্লোবাল ফিউচারস ল্যাবরেটরির সিনিয়র গ্লোবাল ফিউচার সায়েন্টিস্ট অধ্যাপক রাশেদ চৌধুরী বলেন, 'এল নিনো লা নিনার দিকে উল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং চলতি বছর সর্বোচ্চ উষ্ণতম হিসেবে রেকর্ড হতে পারে।'

রাশেদ চৌধুরী বলেন, এল নিনোর সময় মৌসুমী বায়ু দুর্বল হয়ে যায়, প্রশান্ত মহাসাগরের উপরিভাগের পানি উষ্ণ হয়ে ওঠে এবং পূবের বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, এল নিনোর প্রভাব শিগগিরই চলে যাবে এবং এর ফলে সাগর ও বাতাসের আচরণ বিপরীত হবে।

প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো এবং লা নিনার যে প্রভাব, তা বিশ্বব্যাপী আবহাওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh continues to perform poorly in budget transparency

Bangladesh has continued to showcase a weak performance in the open budget rankings among its South Asian peers, reflecting a lack of transparency and accountability in the formulation and implementation of fiscal measures.

16h ago