প্রচণ্ড গরমে ভালো থাকতে ডা. আব্দুল্লাহর একগুচ্ছ পরামর্শ

দেশজুড়ে কয়েকদিন ধরে চলা গরমের তীব্রতায় ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে জীবন।
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি মানুষের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়। এ থেকে সুরক্ষায় একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ।

বাইরের খাবার, খোলা খাবার খাওয়া মানা

দ্য ডেইলি স্টারকে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেন, 'প্রথম কথা হলো বাইরের খাবার যেন কেউ না খায়। খাবার ভেজালমুক্ত হতে হবে। বাইরের খাবার তো ওপেন থাকে। মাছি পড়ে। ধুলাবালি পড়ে। ওগুলোই মানুষ খেতে চায়।'

বাইরের শরবতে না

এ ব্যাপারে ডা. আবদুল্লাহ বলেছেন, 'প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণার্ত হলে অনেকে বাইরের শরবত খেতে চান। গুড়ের শরবত, আখের রস ইত্যাদি। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এটা ডায়রিয়া ও ডায়রিয়াজনিত অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। জন্ডিস, টাইফয়েডের মতো পানিবাহিত রোগের কারণ হতে পারে।'

ঘরের খাবারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত এই চিকিৎসকের ভাষ্য, 'এই গরমে নিজের ঘরে খাবার অনেকক্ষণ রাখলে কিন্তু নষ্ট হয়ে যায়। সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। খাবার যেন টাটকা হয়, হালকা হয়।'

ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ

চর্বিজাতীয় খাবারে না

গরুর মাংস, খাসির মাংসের মতো চর্বিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে। শাকসবজি, ফল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। ঘরের তৈরি খাবার খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এটা খুব জরুরি। চা-কফি কম খেতে হবে।

খাওয়ার পানিতে একটু লবন

খাওয়ার পানিটা যেন বিশুদ্ধ হয়। দুর্বল লাগলে, ক্লান্ত লাগলে, মাথা ঘুরালে পানির মধ্যে একটু লবন মেশানো যেতে পারে। যেহেতেু ঘামের সঙ্গে লবনটা বেরিয়ে যায়।

বাইরে যত কম যাওয়া যায়, তত ভালো

এই পরিবেশে বাইরে যত কম যাওয়া যায় তত ভালো। বাইরে কাজের সময় কমিয়ে আনা যেতে পারে। আর দিনমজুর, রিকশাচালক ও নির্মাণশ্রমিকদের মতো শ্রমজীবীদের বাইরে যেহেতু থাকতেই হয় তাদের ছাতা ব্যবহার করতে হবে। মাথায় বড় করে টুপি ব্যবহার করতে পারেন তারা।

একটানা রোদে না

ঢিলেঢালা হালকা জামাকাপড় পরতে হবে। একটানা রোদে না থেকে কিছুক্ষণ পর পর ছায়ায় জিরিয়ে নিতে হবে। একটানা থাকলে হিট বাড়তে বাড়তে একসময় ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। তখন হিটস্ট্রোক হয়। অজ্ঞান হয়ে মানুষ। এতে মৃত্যুও হতে পারে। পানি-ডাব-ওরস্যালাইন-ফলের রস এগুলো খেতে হবে।

ডা. আব্দুল্লাহর পরামর্শ, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দিকে জোর দেওয়া জরুরি। এখন অসুস্থ হওয়া মানে হাসপাতালে যাওয়া। হাসপাতাল রোগীতে ভর্তি। সিট নেই। ফ্লোরে মানুষ থাকছে। তাই হাসপাতালে যাওয়া মানে বিপদ আরও বাড়িয়ে তোলা। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে বিশেষ করে যারা শিশু, বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং ডায়াবেটিস, হার্ট ও ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

দেশজুড়ে কয়েকদিন ধরে চলা গরমের তীব্রতায় ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে জীবন। ঘর থেকে বের হলেই খরতাপে পুড়ে যাচ্ছে শরীর। দুই জেলায় চলছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। শনিবার যশোরে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এদিনেই ঢাকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের সব স্কুল-কলেজ সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিজেদের অধিভুক্ত কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাবনা শহরে এবং গাজীপুরের কোনাবাড়িতে তীব্র গরমের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের ধারণা, তাদের মৃত্যুর কারণ হিটস্ট্রোক।

এর ভেতরেই তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পুরো এপ্রিলজুড়েই এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

6h ago