সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

চাঁদপুর

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে আজ বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

সকাল ৯টায় হাজীগঞ্জ সাদ্রা দরবার শরীফে ঈদের প্রথম জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী।

তিনি বলেন, বুধবার সৌদি আরব, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চাঁদ দেখা গেছে। আমরা একদিন আগে ৩০ রোজা পূর্ণ করেছি।

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরে অর্ধশতাধিক গ্রামে আজ ঈদ। ঈদের নামাজ আদায় করেছেন গ্রামের মানুষেরা। ছবি: সংগৃহীত

বুধবার সকাল ৯টায় সাদ্রা মাজার কমপ্লেক্স মাঠে ঈদের নামাজ আদায় হয়। এতে ইমামতি করেন পীর ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী।

এদিকে সকাল ১০টায় ফরিদগঞ্জের টোরা মুন্সিরহাট জামে মসজিদে সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা আকরাম হোসেন।

বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবসহ আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু হয়। আর তখন থেকেই হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, মতলব উত্তর উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধ লাখ মুসুল্লি এই নিয়ম অনুসরণ করে আসছেন।

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের চার ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ১০ হাজারের বেশি মানুষ আজ বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় এসব গ্রামে ঈদুল ফিতরের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। গেল কয়েক বছর ধরে এসব গ্রামের মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।

গ্রামগুলো হলো --কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকের ছড়া ইউনিয়নের ছিটপাইকের ছড়া, পাইকের ছড়া ও পাইকডাঙ্গা এবং লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি, চর মহিষামুড়ি, তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি, মুন্সিপাড়া, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের পানি খাওয়ার ঘাট, চন্দ্রপুর ও বোতলা।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়া ঈদুল ফিতর জামায়াতের ইমাম মাওলানা আব্দুল মাজেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ২০১১ সাল থেকে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।'

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সিপাড়াগ্রামে ঈদুল ফিতরের নামায। ছবি: স্টার

মুন্সিপাড়া ঈদগাহ মাঠের সভাপতি আব্দুল ছাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারায় তারা স্বস্তি অনুভব করেন।

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ছিট পাইকেরছড়া গ্রামে ঈদ জামায়াতের ইমাম মওলানা মোকছেদুল ইসলাম জনান, এই গ্রামে ঈদুল ফিতরের জামায়াত অনুষ্ঠিত হলেও উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অনেক মুসল্লি এ জামায়াতে অংশগ্রহণ করেছেন। গেল দুই যুগ ধরে এখানে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

'আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি। আজকের আবহাওয়া খুবই ভালো,' তিনি বলেন।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহির ইমাম ও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস  দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপনের একদিন আগে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে কয়েকটি গ্রামে ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার সকালে। মুসল্লিরা যাতে নিরাপদে শান্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পারেন সেজন্য আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

নোয়াখালী

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন নোয়াখালীর ৪ গ্রামের মুসল্লিরা।

সকাল সাড়ে ৯টায় দুই উপজেলার ৮টি মসজিদে একযোগে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।

নোয়াখালীর চার গ্রামে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফুর রহমান বলেন, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিণারায়নপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছর একদিন আগে রোজা রাখেন। এছাড়াও ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন।  সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা প্রায় ১০০ বছর ধরে ঈদ জামায়াতের আয়োজন করে থাকেন বলে জানান।

রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফের ঈদের জামায়াতের ইমামতি করেন রহিমিয়া রশিদিয়া আল কাদেরিয়া দরবার শরীফ চট্রগ্রামের খাদেম আব্দুল কাদের।

তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ ছাড়া সৌদি আরবসহ সব মুসলিম দেশে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। এ কারণে আমরা তাদের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছি।

আরও

চাঁদপুরে অর্ধশত গ্রামে ঈদ উদযাপন

মুন্সীগঞ্জ

প্রতি বছরের মতো এবারো সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন মুন্সীগঞ্জের নয় গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মুসল্লি।

আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

মুন্সীগঞ্জের ৯টি গ্রামের মানুষ আজ ঈদ উদযাপন করছেন। ছবি: সংগৃহীত

এছাড়া সদর উপজেলার আনন্দপুর, শিলই, নায়েবকান্দি, আধারা, মিজিকান্দি, কালিরচর, বাংলাবাজার, বাঘাইকান্দির ও কংসপুরার গ্রাএ আজ ঈদ পালন করছেন কয়েক ঘর বাসিন্দা।