চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লায় একদিনে সড়কে ঝরল ১১ প্রাণ
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের সদস্য।
আজ মঙ্গলবার ভোররাত থেকে বিকেলের মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের চৌধুরী ঘাটা এলাকায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে দুজন নিহত হন।
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত পাঁচ যাত্রীকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
বারো আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র ঘোষ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চৌধুরী ঘাটা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গ্রামবাংলা পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে এসে ট্রাকটিকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়।'
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, 'দুর্ঘটনার আগেই চালক বাস থেকে লাফ দিয়েছিলেন এবং নিজের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া একজন যাত্রী মারা গেছেন। যাত্রীরাই চালককে দ্রুত গতিতে চালাতে বলছিলেন। বকাঝকাও করছিলেন। মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, বাসটিও জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে।'
দ্য ডেইলি স্টারের ময়মনসিংহ সংবাদদাতা জানান, জেলার সদর, ত্রিশাল ও তারাকান্দা উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ মোট আটজন নিহত হয়েছেন।
সদর উপজেলার কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে ল্যাংড়াবাজার এলাকায় ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে টাঙ্গাইলগামী একটি বাসে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় মাহেন্দ্র (অটোরিকশা)। এতে অটোরিকশার তিনি যাত্রীর মৃত্যু হয়। তারা একই পরিবারের সদস্য। আহত হয়েছেন আরও সাতজন।
নিহত তিনজন হলেন—লুৎফর রহমান (৩০), তার স্ত্রী শাহনাজ (২৫) ও দুই বছর বয়সী ছেলে মাহিত। মাহিত ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। তার বাবা-মাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই দম্পতির আরেক সন্তান মোজাহিদ (৬) বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, লুৎফর রহমানের বাড়ি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় এলাকায়। লুৎফর ও শাহনাজ ভালুকার মাস্টার বাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ঈদের ছুটিতে তারা বাড়ি ফিরছিলেন।
ত্রিশালে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুপরে ত্রিশালের বালিপাড়া রোডে বাসের ধাক্কায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হন।'
তিনি বলেন, 'এ ছাড়া, ত্রিশাল পৌর এলাকার দরিরামপুর এলাকায় ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। একটি পিক-আপ ভ্যান ইউটার্ন নেওয়ার সময় ময়মনসিংহগামী বাস ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।'
তারাকান্দা উপজেলায় বাসের ধাক্কায় একজন নিহত হয়েছেন। তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো ওয়াজেদ আলী জানান, নিহত আবুল বাশার (৬০) অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। তার বাড়ি তারাকান্দা উপজেলায়। এ সময় আরও তিনজন আহত হন।
এর আগে মঙ্গলবার ভোররাতে আড়াইটার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাস-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে একজন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানান ডেইলি স্টারের কুমিল্লা সংবাদদাতা।
মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম লোকমান হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'নিহত সাহিদা বেগমের (৫৫) বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।'
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী নুর উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতে নারী ও শিশুসহ মোট ১৫ জন উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।'
Comments